মুরগি বিক্রির সাড়ে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেই খামারিকে হত্যা

আবুল কাশেম (৪৮) গত বুধবার সাড়ে চার লাখ টাকায় তার খামারের মুরগি বিক্রি করেন। সেই টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার জাকির হাসান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের মোহাম্মদ মোস্তফার ছেলে আলাউদ্দিন মিন্টু (৩৯) এবং ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের বেদরাবাদ শিলুয়া গ্রামের খুরশিদ আলমের ছেলে দ্বীন মোহাম্মদ নয়ন (৩৪)।
পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনায় জড়িত সব আসামি খামারি আবুল কাশেমের পূর্ব পরিচিত। সেই সুবাদে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) তার খামার থেকে প্রায় ৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকার মুরগি বিক্রির তথ্য আসামিরা জানতে পারেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তারা খামারের পাশে বসে আবুল কাশেমকে নিয়ে কিছুক্ষণ আড্ডা দেন। একপর্যায়ে তারা মুরগি বিক্রির টাকা দিতে তাকে চাপ দেন। তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রথমে আলাউদ্দিন মিন্টু লাঠি দিয়ে আবুল কাশেমের মাথায় আঘাত করেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আসামি দ্বীন মোহাম্মদ নয়ন ও ইয়াছিন নামে পলাতক আরেক আসামি তাকে লাথি, কিল-ঘুসি মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে কালিদাস পাহালিয়া নদীতে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান তারা।
পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, এ ঘটনায় শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) আবুল কাশেমের স্ত্রী লিজা আক্তার বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালের দিকে পাঠান নগর ইউনিয়নের পশ্চিম শিলুয়া বুড়া মিয়ার তাকিয়া কালিদাস পাহালিয়া নদী থেকে আবুল কাশেমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি নেত্রকোণার দুর্গাপুর ডলু মুন্সি বাড়ির নচর আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন
পুলিশ ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, আবুল কাশেম পাঠান নগর ইউনিয়নের পশ্চিম শিলুয়া এলাকায় গত আট বছর ধরে ইকবাল হোসেনের খামার ভাড়া নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। খামারের পাশেই একটি ঘরে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন তিনি।
নিহতের স্ত্রী ছালেহা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে খাবার খেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে খামারে কাজ করতে যান আবুল কাশেম। রাত ২টার দিকে আমাদের বসতঘরে দুর্বৃত্তরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ঘুম থেকে উঠে আমার স্বামীকে খোঁজ করি। তাকে না পেয়ে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরে সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করে কালিদাস পাহালিয়া নদীতে গিয়ে তার মরদেহ ভাসমান অবস্থায় দেখতে পাই।
সংবাদ সম্মেলনে সহকারী পুলিশ সুপার মো. ওয়ালী উল্লাহ, ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম এবং তদন্ত কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তারেক চৌধুরী/এএএ