ধুতুরা পাতার ভাজি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া সবাই শঙ্কামুক্ত

চর্মরোগ সারাতে ধুতুরা পাতার ভাজি খেয়ে একই পরিবারের শিশুসহ ছয়জন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ধুতুরা পাতা খাওয়ার পর থেকে দীর্ঘসময় তাদের জ্ঞান না ফেরায় স্বজনরা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। তবে একে একে সবার জ্ঞান ফিরেছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন এখন তারা শঙ্কামুক্ত।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মিতু আক্তার ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে গতকাল রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানাধীন দক্ষিণ চরকুমারিয়া এলাকার খাস গাজীপুর গ্রামের লিটন খানের পরিবারের ৬ সদস্য ধুতুরা পাতা ভাজি করে খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অসুস্থ হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- খাস গাজীপুর গ্রামের নুর হক খানের স্ত্রী বেলাতন নেছা (৬০), ছেলে লিটন খান (৪০), পুত্রবধূ লাকি বেগম (৩৫), নাতনি সামিয়া (৫), সায়মন (৭) ও লামিয়া (৯)।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত এক মাস ধরে লিটন খানসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা চর্মরোগ জনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। পরে স্থানীয় জয়নাল ব্যাপারী নামের এক ব্যক্তি লিটন খানকে পরামর্শ দেন ধুতুরা পাতা ভাজি করে খেতে। জয়নাল ব্যাপারীর পরামর্শ অনুযায়ী লিটন খান ধুতুরা পাতা সংগ্রহ করে নিয়ে বাসায় গেলে কথা অনুযায়ী লিটন খানের স্ত্রী লাকি বেগম ধুতুরা পাতা ভাজি করে গতকাল রোববার দুপুরের খাবারের সঙ্গে সবাইকে পরিবেশন করেন। ধুতুরা পাতা ভাজি দিয়ে ভাত খাওয়ার পর একে একে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় স্বজনরা। অবস্থা গুরুতর হলে সেখান থেকে তাদের ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সদর হাসপাতালে চিকিৎসার পর আজ ভোর থেকে লিটন খানসহ পরিবারের সবার জ্ঞান ফিরতে থাকে। দীর্ঘ সময় তাদের জ্ঞান না ফেরায় স্বজনরা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। চিকিৎসার পরে সবার জ্ঞান ফিরেছে। অসুস্থ শিশু ও বৃদ্ধসহ সকলেই এখন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
লিটন খানের বড় ভাই আব্দুর রশিদ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, লিটন খানসহ অসুস্থ সবার জ্ঞান ফিরেছে। চিকিৎসকরা একের পর এক হাসপাতাল পরিবর্তন করার পরামর্শ দেওয়ার কারণে প্রথমে আমরা ভয় পেয়েছিলাম। তবে আলহামদুলিল্লাহ, ভোর রাতে প্রথমে লিটন খান, পরে একে একে সবার জ্ঞান ফিরেছে। তবে এখনো তারা চিকিৎসকের তত্ত্বাবধায়নে রয়েছেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন, ভয়ের কোনো কারণ নেই। রোগ সারানোর উদ্দেশ্যে ডাক্তার ছাড়া অন্য কারও পরামর্শে কোনো কিছু খাওয়া উচিত হয়নি তাদের।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মিতু আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ধুতুরা পাতার ভাজি খেয়ে অসুস্থ হওয়া সবার জ্ঞান ফিরেছে। তারা সবাই এখন শঙ্কামুক্ত। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে ভয়ের কোনো কারণ নেই। আশা করছি, দ্রুতই তারা সুস্থ হয়ে যাবেন।
সাইফ রুদাদ/এমজেইউ