বিয়ে থেকে ফেরার পথে কোপ, হত্যা মামলার আসামি নিহত

আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মন্টু বেপারী নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ২০২০ সালে রিয়াজ নামে এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ওই মামলার প্রধান আসামি ছিলেন মন্টু বেপারী।
শুক্রবার (১ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়নের সাকিম আলী মাদবর কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই সময় একটি বিয়ে বাড়ি থেকে ফিরছিলেন তিনি।
নিহত মন্টু বেপারী(৬০) সেনেরচর ইউনিয়নের ভোলাই মুন্সী কান্দি গ্রামের আরশেদ আলী বেপারীর ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভোলাই মুন্সী কান্দি গ্রামের মন্টু বেপারীর সঙ্গে সাকিম আলী মাদবর কান্দি গ্রামের এমদাদ মাদবরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘ বছরের বিরোধ চলছে। তিন বছর আগেও দুই পক্ষের শত্রুতার জেরে রিয়াজ নামে এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ওই মামলার প্রধান আসামি ছিলেন মন্টু বেপারী।
একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে শুক্রবার সন্ধ্যায় মন্টু বেপারী ও তার ভাতিজা বাবু বেপারী মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। তারা সাকিম আলী মাদবর কান্দি এলাকায় আসলে এমদাদ মাদবর ও তার লোকজন তাদের গতিরোধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দিলে আত্মরক্ষার জন্য তারা মালেক মাদবরের ঘরে প্রবেশ করে। এসময় ওই দুর্বৃত্তরা মালেক মাবদরের ঘরে ঢুকে তাদেরকে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মন্টু বেপারীকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত বাবু বেপারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মন্টু বেপারীর চাচাতো ভাই মামুন বেপারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমদাদ মাদবর ও দেলোয়ার মাদবরের লোকজন আমার ভাইকে হত্যা করেছে। তারা আগে থেকেই হত্যার পরিকল্পনা করেছিল । আমার ভাই বাড়িতে ফেরার সময় তার ওপর হামলা চালানো হয়। আমার এক ভাতিজার হাতের কয়েকটি আঙুল পড়ে গেছে, তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নিহতের ভাগিনা ফারুক সরদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিয়ে বাড়ি থেকে বাড়িতে ফেরার পথে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে এমদাদ মাদবর ও তার লোকজন আমার মামাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। যারা আমার মামাকে হত্যা করেছে আমি তাদের সকলের ফাঁসি চাই।
ফারুক সরদারের স্ত্রী নিশি আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে প্রথমে মন্টু বেপারী ও বাবু বেপারীকে কোপ দেওয়া হলে তারা আত্মরক্ষার জন্য মালেক বেপারীর ঘরে ঢুকে যায়। পরে ঘরের দরজা ভেঙে তাদের কোপানো হয়। যারা এমন নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা করে তাদের ফাঁসি চাই।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জাজিরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিনের শত্রুতা ছিল। এই শত্রুতার জের ধরেই মন্টু বেপারী নামের একজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মন্টু বেপারীর মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাইফ রুদাদ/এমটিআই