বেইলি রোডে নিহতের মধ্যে চারজন ভোলার, শোকে আচ্ছন্ন দ্বীপজেলা
ঢাকার মতিঝিলের এজিবি কলোনির বাসিন্দা মেহরান কবির দোলা। চাকরি করতেন আইএফআইসি ব্যাংকে। চাকরির তিন বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ছোট বোন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা কবির মাহিকে নিয়ে নৈশভোজে গিয়েছিলেন বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে। সঙ্গে নেন এজিবি কলোনির বান্ধবী স্মৃতিকে। ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের ভবনে লাগা আগুনে স্মৃতি বেঁচে ফিরলেও মারা যান দুই বোন দোলা ও মাহি।
এই দুই বোনের বাড়ি ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নে। ভোলা জেলার আরও দুইজন মারা গেছেন বেইলি রোডের সেই আগুনে। এই চারজনের মৃত্যুতে দ্বীপজেলা ভোলায় স্বজনদের শোক আর আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। নিহত চারজনে একজনকে ভোলায় দাফন করা হয়েছে। বাকি তিনজনকে ঢাকায়।
ভোলায় দাফন করা হয় সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদি উইনয়নের চর কুমুরিয়া গ্রামের দিনমজুর সিরাজ উদ্দিনের ছেলে নয়নকে। তিনি কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে সহকারীর (বয়) কাজ করতেন।
নয়নের মা নাজমা বেগম বলেন, ‘২৫ ফেব্রুয়ারি কাজের খোঁজে বাড়ি থেকে ঢাকা যায় নয়ন। ঘটনার তিনদিন আগে কাজ পায়। মোবাইলে আমাকে বলেছে, আম্মা একটা বড় হোটেলে কাজ জোগাইছি। সামনে ঈদ, তুমি কোনো টেনশন কইরো না। ঈদে বাড়ি আসমু। আমিতো টেনশন করি নাই। বাজান আমার লাশ হইয়া বাড়ি ফিরছে। আমি এহন তার কবর পাহারা দেই।’
উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন মুনসুর বলেন, নয়নের পরিবার খুবই অসহায়। ওর পিতার পাশাপাশি নয়নই ছিল পরিবারের আয়ের উৎস। কিন্তু তার মৃত্যুতে পরিবারটি পথে বসেছে।
নিহত আরেকজন জুনায়েদ। ভোলা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিএভিএস সড়কের বাসিন্দা এবং ঢাকার একটি ‘ল’ কলেজের শিক্ষার্থী ছিল। জুনায়েদের বাড়ি ভোলা হলেও তারা পরিবারসহ ঢাকায় থাকতেন।
ভোলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তামিম আল ইয়ামিন বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারকে জেলা প্রশাসন থেকে সর্বাত্মক সহায়তা করা হচ্ছে। এমন মৃত্যু দুঃখজনক।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএএ