জবি শিক্ষার্থী আম্মান সম্পর্কে যা বলল এলাকাবাসী
ফেসবুক পোস্টে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে দায়ী করে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার তৈরি হয়। সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে। এরপর এ ঘটনায় সহকারী প্রক্টর ও আম্মানকে অভিযুক্ত করে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন অবন্তিকার মা।
রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পুরাড়দাইড় গ্রামে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও অবন্তিকার সহপাঠী ছিলেন।
আম্মান সম্পর্কে জানতে এলাকায় অনেককে জিজ্ঞেস করলেও এলাকাবাসী মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এ বিষয়ে তার নামে মামলা হওয়ায় হতভম্ব তারা। ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করেন স্থানীয় অনেকেই ।
ঈশ্বরদী উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের শেষ সীমানা পোড়ারদাইর গ্রামের একটি মসজিদের পেছনেই আম্মানের পৈতৃক ভিটা। এখানেই তার বাবা-মাসহ আত্মীয় স্বজনের বসবাস। বাবা পেশায় একজন কৃষিপণ্য ও ভুসিমাল ব্যবসায়ী। দুই ভাইয়ের মধ্যে আম্মান ছোট। বড় ভাই রাম্মান সিদ্দিকী ঢাকায় পড়াশোনা করেন।
প্রাথমিক ও স্কুল জীবনে পাবনার ঈশ্বরদীতে সময় কাটলেও এসএসসি পাস করার পর আর এলাকায় থাকেনি আম্মান। সাধারণ মানুষের সঙ্গে ওভাবে চলাফেরাও করেননি তিনি।
গতকাল রোববার (১৭ মার্চ) দুপুরে পোড়ারদাইড় গ্রামে সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থী অবন্তিকা আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অনেকে দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে অবন্তিকা আত্মহত্যার পেছনে আম্মানের প্ররোচনার বিষয়টি নিয়ে কেউ কথা বলতে চাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, আম্মান আমাদের এলাকার ছেলে হলেও অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত ও সাক্ষ্য প্রমাণের ব্যাপার। তাই না জেনে পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলতে চাই না। তবে আম্মান ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন তিনি।
আম্মানের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আম্মানের চাচাতো ভাই পরিচয়ে সাইফুল্লাহ নামের এক যুবকের সঙ্গে কথা হয়, তিনি জানান, আম্মানের বাবা চাচাসহ বাড়িতে কেউ নেই। এসব বিষয় নিয়ে তিনিও কথা বলতে নারাজ। তবে ‘আম্মান ষড়যন্ত্রের শিকার’ বলে তিনি দাবি করেন। আম্মান ছোটবেলায় আওতাপাড়া কিন্ডারগার্টেন পড়াশোনা করেন। এরপর বাশেঁরবাদা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিকের লেখাপড়া শেষ করে ঢাকার মোহাম্মদপুরে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হন। এরপর দীর্ঘদিন ঢাকাতে কেটেছে তার।
প্রতিবেশী আমিরুল ইসলাম বলেন, আম্মান আমাদের এলাকার সন্তান। ছোটবেলা থেকে এখানে বেড়ে উঠেছে। একটু বড় হওয়ার পরই সে ঢাকায় পড়াশোনা করতে চলে যায়। এখন একটা ঘটনা ঘটছে। এখানে ভালো করে তদন্ত হওয়া দরকার। সে ষড়যন্ত্রের শিকারও হতে পারে।
ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসে আম্মান মাঝেমধ্যে কয়েকজনকে প্রাইভেট পড়াতেন। এদেরই একজন পাবনা এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী আসিফ। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, প্রাইভেট পড়ানোর সময় ভাইয়া (আম্মান) কিছু সমস্যার কথা বলেছিল। পরে আর এ বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়নি।
রাকিব হাসনাত/এএএ