খুলনার এ্যাজাক্স জুট মিলের চেয়ারম্যানের ২ বছরের কারাদণ্ড

খুলনা বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের মামলায় এ্যাজাক্স জুট মিলের চেয়ারম্যান কাউছার জামান বাবলাকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন শ্রম আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে একমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার (২০ মার্চ) খুলনা শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান (জেলা ও দায়রা জজ) রাজিয়া সুলতানা এ রায় দেন।
খুলনা শ্রম অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক মো. মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
খুলনা শ্রম অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, খুলনার বেসরকারি এ্যাজাক্স জুট মিলের ৬২১ জন শ্রমিকের প্রায় ১৫ কোটি টাকা পাওনা ছিল। মিলের সিবিএ নেতৃবৃন্দ শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রাপ্য মজুরি ও উৎসব বোনাস আদায়ের জন্য ২০১৩ সালের ১৪ জুলাই মিল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। তবে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সিবিএ নেতৃবৃন্দ পরবর্তীতে এ ব্যাপারে খুলনা শ্রম দপ্তরে অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে খুলনা বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের আয়োজনে ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর মালিক-শ্রমিক ও সরকার পক্ষে সমন্বয় ত্রি-পক্ষীয় সভা হয়। সভায় দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ করে মিল চালু করবেন কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করায় ২০১৫ সালে এ্যাজাক্স জুট মিলের চেয়ারম্যান কাউছার জামান বাবলার বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা করেন বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান।
খুলনা শ্রম অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ত্রি-পক্ষীয় বৈঠকে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটির বাস্তাবায়ন হয়নি। এ ঘটনায় ২০১৫ সালে মিল মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান রাজিয়া সুলতানা রায় ঘোষণা করেন। তবে মিলের চেয়ারম্যান আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। মিলটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।
এদিকে বিকেলে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ ও এ্যাজাক্স জুট মিলের চেয়ারম্যান কাউছার জামান বাবলাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে খুলনা-যশোর মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বেসরকারি পাট, সুতা বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন ও এ্যাজাক্স জুট মিলের সাধারণ শ্রমিক কর্মচারীরা। মিছিল শেষে ফেডারেশনের সভাপতি শেখ আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আগামী ২৭ মার্চ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান শ্রমিক নেতারা।
সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল খান, সহ সভাপতি সেকেন্দার আলী, নিজামউদ্দীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিল কাজী, প্রচার সম্পাদক সাইফুল্লাহ তারেক, শ্রমিক নেতা আব্দুল ওহাব, কাজী মুস্তাফিজুর রহমান, ওবায়দুর রহমান, বাবুল হোসেন প্রমুখ।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর