‘ছুটি শেষে এসে দেখি স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিই নেই’

জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের একটি ভবন হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেছে। কে বা কারা এই ভবন ভেঙেছে জানে না স্বাস্থ্য বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মচারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের এই ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ভবনটিতে ছিল তিনটি কক্ষ। এখানে একজন নারী দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিলেন।
সরেজমিনে দেখা দেখা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রধান গেটে ইটসহ ভবনের ভাঙা কিছু অংশ পড়ে আছে। এ ছাড়া কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রাঙ্গণে দেখা গেছে সেই ভবনের কিছু রড ও একটি ভেকু মেশিন।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে বসবাসকারী খালেদা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা হাসপাতালের পাশে থাকি। শুক্রবার (২৯ মার্চ) চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের লোকজন এসে বেলা ১১টার দিকে ভবন ভাঙা শুরু করেন। রাত ১টা পর্যন্ত ভবন ভাঙার কাজ চলে। আমার ছেলে জিজ্ঞেস করায় তারা মারধর করতে এসেছিল।
স্থানীয়রা জানান, কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের নির্দেশে তার ঘনিষ্ঠ সহকারী সাজু বুলডোজার ও ভেকু দিয়ে ভবনটি ভাঙার কাজ করে।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. রিপন রায় বলেন, আমরা বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে চলে যাই। গতকাল শনিবার অফিসে এসে দেখি যে পরিত্যক্ত ভবনটি কে বা কারা ভেঙে নিয়ে গেছে। পরে আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই ও জামালপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খান বলেন, এই ভবনটি এই এলাকার মাদক ব্যবসার একটি কারখানা ছিল। এই ভবনটি সরানোর জন্য আমি স্বাস্থ্য বিভাগ, উপজেলা প্রশাসনসহ সদরের এমপিকে কয়েকবার অবগত করেছিলাম। তবে কে এই ভবন ভেঙেছে তা আমরা জানি না। ভবন ভাঙার পর আমি ভবনের ভাঙা অবশিষ্ট অংশের নিরাপত্তার জন্য বাজারের নিরাপত্তাকর্মীদের নিয়োগ করেছি।
জামালপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উত্তম কুমার সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আর এই বিষয়ে জামালপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবির বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
রকিব হাসান নয়ন/এমজেইউ