যশোরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের পলাতক ৫ শিশু উদ্ধার

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের জানালা ভেঙে পালিয়ে যাওয়া ৮ বন্দি শিশুর মধ্যে পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুদের অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের উদ্ধার করেন বলে জানান কেন্দ্রের কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার সকালে দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে অন্য তিনজনকেও একইভাবে উদ্ধার করা হয়। এর আগে গতকাল শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পালিয়ে যাওয়া শিশুদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে মঙ্গলবার সকালে নড়াইলের মুন্না গাজী এবং দুপুরে যশোরের আব্দুল কাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর সোমবার রাতে অন্য তিনজনকেও একইভাবে উদ্ধার করা হয়
জাকির হোসেন, সহকারী পরিচালক, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র
উদ্ধার হওয়া শিশুরা হলো যশোরের হৃদয়, আব্দুল কাদের, ফারদিন দুর্জয়; খুলনার রোহান গাজী ও নড়াইলের মুন্না গাজী।
শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক (তত্ত্বাবধায়ক) জাকির হোসেন জানান, পালিয়ে যাওয়া শিশুদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে মঙ্গলবার সকালে নড়াইলের মুন্না গাজী এবং দুপুরে যশোরের আব্দুল কাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর সোমবার রাতে অন্য তিনজনকেও একইভাবে উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, রোববার গভীর রাতে কেন্দ্রের আবাসিক ভবনের জানালা ভেঙে ৮ শিশু বন্দি পালিয়ে যায়। তারা হলো যশোরের হৃদয় (১৭), ফারদিন দুর্জয় (১৫) ও আব্দুল কাদের (১৪), খুলনার রোহান গাজী (১৪) ও সোহাগ শেখ (১৭), নড়াইলের মুন্না গাজী (১৫), গোপালগঞ্জের শাহ আলম (১৮) এবং বরিশালের মাইনুর রহমান সাকিব (১৫)।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের রাজু বিশ্বাস (১৬) নামের এক বন্দি পালিয়ে যায়। রাজু ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার দেবকিনন্দপুর গ্রামের আব্দুল ওহাব বিশ্বাসের ছেলে।
এ বিষয়ে যশোরের পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন জানান, এ ঘটনার পরে জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পরিদর্শন করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কক্ষের দুর্বল জানালার কারণে পালিয়ে যায় আট কিশোর অপরাধী। উচ্ছৃঙ্খলতা করার কারণে ৮ শিশুকে কক্ষটিতে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। কিন্তু কক্ষের জানালা দুর্বল থাকায় তা ভেঙে মই বেয়ে উঁচু প্রাচীর ডিঙিয়ে তারা পালিয়ে যায়।
২০১৪ সালের মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পালিয়ে যায় সাজাপ্রাপ্ত ৬ কিশোর। তারা হলো নড়াইলের নড়াগাতি থানার বাওসোনা গ্রামের মুজাহিদ মোল্লার ছেলে বাপ্পী (১৭), বগুড়া সদর উপজেলার ছোট কুমিরা পশ্চিমপাড়া এলাকার বেলাল হোসেনের ছেলে রনি ওরফে জীবন (১৬) ও দুলাল প্রামাণিকের ছেলে আব্দুর রহমান ওরফে কাইল্যা (১৮), একই উপজেলার দক্ষিণ ফুলবাড়িয়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে আশিকুর রহমান আশিক (১৮) ও সাইফুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আলী জিসান (১৬) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ব্রাহ্মণগাঁও এলাকার ফজর আলীর ছেলে জুনাইদ (১৮)।
উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১৮ বন্দি শিশুর ওপর নির্মম নির্যাতন চালান। এতে ৩ শিশু নিহত হন এবং ১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ঘটনায় পাঁচ কর্মকর্তা ও সাত শিশুর বিরুদ্ধে মামলা চলমান। আর ওই সময় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ ৫ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত রিপোর্টে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কাজে গাফিলতির বিষয়টি উঠে এসেছে।
এনএ