নাবিক সাব্বিরের পরিবারে নেই ঈদের আমেজ
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি নাবিক সাব্বির হোসেনের পরিবারে এখনো শোক কাটেনি। পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম সাব্বিরকে না পেয়ে ঈদে সেই শোক বেড়েছে বহুগুণে। জিম্মি দশা থেকে মুক্তি না পাওয়ায় টাঙ্গাইলের নাগরপুরের সাব্বিরের গ্রামের বাড়িতে নেই ঈদের আনন্দ। অপহরণ হওয়ার পর থেকেই ছেলের মুক্তির সংবাদের অপেক্ষায় এরই মধ্যে প্রায় এক মাস পার করেছেন সাব্বিরের বৃদ্ধ মা-বাবা। সরকার থেকে ঈদের আগেই ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিলেও ছেলেকে না পেয়ে হতাশ তারা।
ঈদুল ফিতরে সাব্বিরের গ্রামের বাড়িতে সবাই যেখানে পরিবার নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এসেছেন সেখানে সাব্বির তার পরিবারে অনুপস্থিত। তাকে ছাড়া তার বাবা-মা-বোনের কারোও মধ্যে ঈদের আনন্দ নেই। এমভি আব্দুল্লাহর নামে ওই জাহাজের নাবিক সাব্বির।
সাব্বির নাগরপুরের সহবেতপুর ইউনিয়নের ভাঙা ধলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় উপজেলার কাজিরপাচুরিয়া মামার বাড়িতে থাকতেন সাব্বির। তিনি ২০১৪ সালে সহবতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১৬ সালে কাগমারি এম এম আলী কলেজ থেকে এইচএসএসসি পাস করার পর ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। ২০২২ সালে এমভি আব্দুল্লাহ নামে পণ্য বহনকারী একটি জাহাজে চাকরি নেন।
সাব্বিরের বাবা হারুন অর রশিদ ও মা সালেহা বেগম বলেন, পরিবারের সাথে ঈদ করতো সাব্বির। পরিবারসহ বন্ধুদের নিয়ে আনন্দে করতো। সেমাই খুব পছন্দ করতো সাব্বির। সে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকায় পরিবারে নেই ঈদের আমেজ। প্রতি বছর সাব্বির ঈদের কেনাকাটা করলেও এবার কিছুই কেনা হয়নি। ঈদের দিন পরিবার মাতিয়ে রাখতো সে। সে না থাকায় ঈদ বলতে কিছুই নেই আমাদের।
নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, সকল আটককৃতদের ফেরাতে সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সাব্বিরের পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষ্যে তাদের বাড়িতে ঈদ উপহার পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশের এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। জাহাজটি সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। পণ্যবহনকারী জাহাজটিতে ২৩ জন নাবিকের মধ্যে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সাব্বির হোসেনও রয়েছেন।
অভিজিৎ/আরএআর