সিলেটে বৃদ্ধাকে হত্যার ঘটনায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলার যুক্তরাজ্য ফেরত বৃদ্ধা রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগম (৬০) হত্যা মামলায় এক আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি রায়ে আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা প্রথম আদালতের বিচারক জজ মো. ইব্রাহিম মিয়া এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল জলিল ওরফে কালু একই উপজেলার নগরীকাপন গ্রামের মৃত আব্দুল কাছিমের ছেলে।
সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন
মামলা সূত্রে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের এক বছর আগে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেন রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগম। তার সন্তানরা যুক্তরাজ্যে বসবাস করায় তিনি ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার নিজ বাসায় একা থাকতেন। তার ভাই মামলার বাদী আব্দুল কাদির ও আব্দুল খালিক বোনের দেখাশোনা করতেন। ২০২০ সালের ২৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগমের সঙ্গে সর্বশেষ ফোনে কথা বলেন তার ভাই আব্দুল কাদির। এরপর ফোন বন্ধ পেয়ে ৩০ জুলাই বাদীর ছোট ভাই আব্দুল খালিক তার ছেলে আব্দুস সামাদকে পাঠালে ঘরের কলাপসিবল গেট তালা দেখে বাড়িতে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে না পেয়ে ফের রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় গিয়ে কলিং বেল চাপলেও কোনো সাড়া মেলেনি। ঘটনাটি যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ছেলেমেয়েদের জানানোর পর থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ গিয়ে বাসার ভেতরে ডাইনিং রুমের বাথরুমে গলাকাটা ও মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় থেকে রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে। এই ঘটনার পরদিন ১ আগস্ট নিহতের ছোট ভাই ওসমানী নগরের ছোট বিরাই গ্রামের মৃত মন্তাজ উল্লাহর ছেলে আব্দুল কাদির বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি করে একটি হত্যা মামলা (নং-০১/০৮/২০) দায়ের করেন।
তদন্তকালে পুলিশ নিহতের পার্শ্ববর্তী বাসার জলিল ওরফে কালু মিয়াকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী নারীর লুণ্ঠিত মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে গ্রেপ্তার করে। পরে স্বেচ্ছায় তিনি আদালতে হত্যায় জড়িত থাকার স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। এসময় তার জবানবন্দিতে বসতঘর থেকে হত্যার আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ।
পরবর্তীতে জলিল ওরফে কালুকে অভিযুক্ত করে ২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম। মামলাটি আদালতে বিচারের জন্য ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করে আসামির নামে বিচার শুরু হলে দীর্ঘ শুনানিতে ২১ সাক্ষীর ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।
মাসুদ আহমদ রনি/এমএসএ
