পাগলা মসজিদ : সাড়ে ৩ ঘণ্টায় গণনা হলো কত টাকা?
চার মাস ১০ দিনের মাথায় কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে মিলেছে ২৭ বস্তা টাকা, বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টায় দানবাক্স খুলে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ৮টার পরেই শুরু হয় গণনার কাজ। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত গণনা হয়েছে তিন কোটি ১৯ লাখ টাকা।
রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত গণনায় ৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। মসজিদের অ্যাকাউন্টে জমা করার জন্য এ টাকাগুলো রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখায় পাঠানো হয়েছে। এখনো গণনার কাজ চলছে। এতে প্রায় ২২০ জনের একটি দল অংশ নিয়েছে।
মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের ৯টি দান দানবাক্স ও একটি ট্যাঙ্ক খোলা হয়েছে। জেলা শহরের নরসুন্দা নদী তীরের ঐতিহাসিক এই মসজিদে লোহার ৯টি দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন থেকে চার মাস পরপর এই সিন্দুক খোলা হয়।
জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আপনারা জানেন কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অন্যতম একটি জায়গা। সব ধর্মের মানুষ এখানে দান করে থাকেন। তাদের দানের অর্থ দিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স করা হবে যেখানে এক সঙ্গে ৩০ হাজার মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
এর আগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্সে রেকর্ড ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গেছে। সাড়ে ১৫ ঘণ্টায় ২২০ জনেরও বেশি লোক এ টাকা গণনায় অংশ নেন। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে।
গত বছরের ১৯ আগস্ট খোলা হয়েছিল এ মসজিদের ৮টি দানবাক্স। তখন ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সাড়ে ১৩ ঘণ্টায় ২০০ জনেরও বেশি লোক এ টাকা গণনা শেষে ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা পাওয়া যায়। এছাড়া একটি ডায়মন্ডের নাকফুলসহ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া যায়।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির তথ্য মতে জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদে ৯টি দানবাক্স থাকলেও এবার আরও একটি ট্যাঙ্ক বাড়ানো হয়েছে।
মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়। এছাড়া করোনাকালে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককেও অনুদান দেওয়া হয়েছিল এ দানের টাকা থেকে।
জানা যায়, মসজিদটিকে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে ‘পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স’ এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা।
মোহাম্মদ এনামুল হক/আরকে