‘দখল ঠেকাও, ব্রহ্মপুত্র বাঁচাও’
এক সময়ের ব্রহ্মপুত্র নদ এখন অস্তিত্ব সংকটে। পুরো নদ জুড়েই যেন ধু-ধু বালুচর। কোনো কোনো স্থান দিয়ে হেঁটে কিংবা মোটরসাইকেলে নদ পার হচ্ছে মানুষ। এমন অবস্থায় সঠিকভাবে নদ খনন, দখলমুক্ত করে ব্রহ্মপুত্রকে বাঁচানোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা।
সোমবার (৬ মে) দুপুরে নগরীর কাচারিঘাটে ‘দখল ঠেকাও, ব্রহ্মপুত্র বাঁচাও’ এ স্লোগানে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে ব্রহ্মপুত্র সুরক্ষা আন্দোলন নামে একটি সামাজিক সংগঠন।
সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আল আজাদের পরিচালনায় কবি শামসুল ফয়েজ, কবি সাঈদ ইসলাম, কবি সরকার আজিজ, কবি এহসান হাবীব, আহমেদ রেদওয়ান, লোকমা সৃজন, মঞ্জুরুল আলম রুমি প্রমুখ এতে অংশ নেন।
কবি সাঈদ ইসলাম বলেন, আমরা দাঁড়িয়েছি ব্রহ্মপুত্রকে টিকিয়ে রাখার দাবি নিয়ে। ব্রহ্মপুত্র খনন প্রকল্পের মাধ্যমে মূলত নদকে ভরাট করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্রের যে মূল স্রোত ছিল তা আজ আর নেই। দুই পাড়ে সামান্য যে নালি রয়েছে সেটাকেও বন্ধ করে দেওয়ার জন্য এখানে স্থায়ী স্থাপনা করা হচ্ছে। আমরা শুনতে পাচ্ছি হিজড়াদের জন্য একটি ক্যাফেটেরিয়া তৈরি করা হচ্ছে। মূলত সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠীদেরকে স্থায়ীভাবে স্থাপনা করে দেওয়ার মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র দখলের একটি প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে।
আবুল কালাম আল আজাদ বলেন, আমাদের চোখের সামনে ব্রহ্মপুত্র নদটি মেরে ফেলা হচ্ছে। কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ত নদকে ১০০ মিটারে নামিয়ে এনে যে খনন প্রকল্প করা হয়েছিল তিন হাজার কোটি টাকার, সে খনন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ, মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে। আরও টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু আজ ব্রহ্মপুত্রের বুক চরে ভরে গেছে। পায়ে হেঁটে পার হওয়া যায়, মাঝখান দিয়ে মোটরসাইকেল চলছে।
ব্রহ্মপুত্র মাঝখানে দখলের প্রক্রিয়া চলছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, কাচারিঘাটে হিজড়াদের জন্য একটি ক্যাফে তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রকে মেরে ফেলার জন্য সরকারি, বেসরকারি ও ভূমিদস্যুদের সম্মিলিত একটি প্রয়াস চলছে। আমরা চাই দখলমুক্ত ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে নদটি খনন করে যেন ব্রহ্মপুত্রের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হয়।
উল্লেখ্য, প্রায় পাঁচ বছর আগে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ২৬ শতাংশ। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পটির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে।
উবায়দুল হক/এএএ