সুন্দরবনে আগুন : পোড়া বনে জোয়ার ও বৃষ্টির পানি জমেছে
চার দিন পরে সুন্দরবনের আমরবুনিয়া এলাকায় লাগা আগুন পুরোপুরি নিভেছে। পোড়া বনভূমিতে জমেছে জোয়ার ও বৃষ্টির পানি। মঙ্গলবার (৭ মে) দিনব্যাপী আগুন লাগা এলাকা পর্যবেক্ষণ করে আগুনের অস্তিত্ব পায়নি ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগের সদস্যরা। তবে অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য আরও ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম।
জানা যায়, গত শনিবার (৪ মে) বিকেলে সুন্দরবনের আমরবুনিয়া এলাকায় আগুনের খবর পায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। সেটিন সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারেনি বন বিভাগ। পরদিন রোববার সকালে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বন বিভাগের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট আগুন নির্বাপণ শুরু করে। এরপর সোমবার সকাল থেকে আবারও সবার সম্মিলিত চেষ্টায় আরও জোরে সোরে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। আগুন নেভানোর কাজে প্রশিক্ষিত বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় ৫ শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি না নিভলেও, এদিন দুপুর নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় ফায়ার সার্ভিস। এরপরেও ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট বনের মধ্যে খুঁজে খুঁজে আগুন ও ধোয়ায় পানি দিচ্ছিলেন। এরই মধ্যে সন্ধ্যায় মুশলধারে বৃষ্টি নামে। রাতভর বৃষ্টি ও সকালে অমাবস্যার জোয়ারের পানি প্রবেশ করে আগুন লাগা স্থানে। দিনব্যাপী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আগুন ও ধোয়ার অস্তিত্ব না পেয়ে অবশেষে সন্ধ্যায় আগুন সম্পূর্ণ নিভে গেছে বলে জানায় বন বিভাগ।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা(ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, সোমবারের বৃষ্টি ও অমাবস্যার জোয়ারে বনের আগুন লাগা স্থানে পানি প্রবেশ করেছে। এখন আর বনের মধ্যে কোথাও আগুনের অস্তিত্ব নেই। এরপরও আমরা আগামী ২৪ ঘণ্টা ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করব।
এদিকে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, আগুন লাগার স্থান ড্রোনের মাধ্যমে পুনরায় মনিটরিং করা হয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় ড্রোনের মাধ্যমে মনিটরিং করা হলেও বনভূমির কোথাও কোনো আগুনের আলামত পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি বনের অভ্যন্তরে পায়ে হেঁটে একাধিক টিম ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে। পরিদর্শনকালে দেখা যায় আগুন লাগার স্থানে বৃষ্টিপাতের ফলে যথেষ্ট পরিমাণে পানিতে ভিজে গেছে। কোথাও কোথাও পানি জমে রয়েছে। সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনায় সুন্দরবনের আমরবুনিয়া ক্যাম্পের আওতাধীন বনাঞ্চলের আগুন নিভে গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে জিপিএসের মাধ্যমে আমরা আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা নিরূপণের চেষ্টা করেছি। আগুনে ৭ দশমিক ৯৮ একর বনভূমি আক্রান্ত এবং সাড়ে ৫ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরেও তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
শেখ আবু তালেব/এএএ