টাঙ্গাইলে আ.লীগের দুইপক্ষের দলাদলি, ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলে দুইটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলছে। নির্ধারিত সময়ে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও বৃষ্টির কারণে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি অনেক কম। বুধবার (৮ মে) সকাল ৯টার দিকে মধুপুর উপজেলার গাংগাইর আহম্মদ আলী মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়সহ কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে নির্বাচন নিয়ে মধুপুর ও ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও প্রার্থীদের মধ্যে চরম কোন্দল দেখা দিয়েছে। এতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এলাকায়।
জানা যায়, মধুপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। এরমধ্যে দোয়াত কলম প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবু, আনারস প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী ও মোটরসাইকেল প্রতীকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মীর ফরহাদুল আলম মনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন। এ উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছেন দুই লাখ ৫৫ হাজার ২১৮ জন।
ধনবাড়ী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন পাঁচজন। এরমধ্যে ঘোড়া প্রতীকে উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরা, দোয়াত কলম প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুই বারের সাবেক পৌরসভার মেয়র খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন, মোটরসাইকেল প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ তালুকদার সবুজ, আনারস প্রতীকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান রনি ও হেলিকপ্টার প্রতীকে সাবেক ছাত্রনেতা আজিজুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন। উপজেলায় ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৫৮ জন।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপির সঙ্গে মধুপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরোয়ার আলম খান আবুর দ্বন্দ্ব রয়েছে। সেই দ্বন্দ্ব উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পর্যন্ত গড়িয়েছে। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ইয়াকুব আলীকে সমর্থন দেন সংসদ সদস্য আব্দুর রাজ্জাক। অন্যদিকে সরোয়ার আলম খান আবুকে সমর্থন দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসান চৌধুরী কায়সার। এই কোন্দল তৃণমূল পর্যন্ত গড়িয়েছে।
এ ছাড়া ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি তার খালাতো ভাই হারুনার রশিদ হীরাকে সমর্থন দিয়েছেন। এতে সাবেক মন্ত্রীর মামাতো ভাই ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম তপনের সঙ্গে কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মতিয়ুর রহমান বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কেউ কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কিছু করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, দুই উপজেলায় দুইজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ২০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৫ প্লাটুন বিজিবিসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব নির্বাচনে দায়িত্বপালন করছেন।
অভিজিৎ ঘোষ/এএএ
