ভোটের ফল ঘোষণার সময় ভাঙচুরের ঘটনায় কারাগারে ৫
নীলফামারীর ডোমার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণার সময় উপজেলা পরিষদের হল রুমের আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থক ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
কারাগারে যাওয়া অভিযুক্তরা হলেন, ছোট রাউতা ফরেস্ট পাড়া গ্রামের মৃত হামিদুল ইসলামের ছেলে আবু সুফিয়ান (৪০), বড় রাউতা থানাপাড়া গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে মো. রাকিউল ইসলাম (৪০), পশ্চিম বোড়াগাড়ি স্কুলপাড়া গ্রামের আনছার আলীর ছেলে রিমুন ইসলাম (২৪), মেলা পাঙ্গাপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে হারুন অর রশিদ (৩০) ও চিলাই পাগলা বাজারের মৃত নুরুল হকের ছেলে মো. দুলু (৩৮)।
এর আগে বুধবার রাত ৯টার দিকে ডোমার উপজেলা পরিষদের হল রুমে পরাজিত আনারস প্রতীকের প্রার্থী তোফায়েল আহমেদের ছোট ভাই মনজুর আহমেদ ডনের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে রাতেই উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে ডোমার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করা হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ শেষে ডোমার উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে (কন্ট্রোল রুম) ফল ঘোষণার কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফায়েল আহমেদের ছোট ভাই মনজুর আহমেদ ডনের নেতৃত্বে শতাধিক লোক লাঠিসোটা নিয়ে সেখানে হামলা চালান। এরপর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত ১১টার দিকে ফল ঘোষণা করা হলে আবারও উত্তেজনা শুরু হয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ গুলি ছোড়ে। দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওই সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুধবার রাতের ওই ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ ২১টি রাবার বুলেট ছোড়ে। ওই ঘটনায় রাতেই ডোমার নির্বাচন কার্যালয়ের কার্যালয় অফিস সহকারী ফারুক হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৭০০ জনের নামে মামলা করেছেন।
বিজয়ী প্রার্থী ফারহানা আক্তার সুমি ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরাজয় নিশ্চিত জেনে আনারস প্রতীকের প্রার্থী তোফায়েল আহমেদের ছোট ভাই ডনের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন লাঠিসোটা হাতে কন্ট্রোল রুমে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় চেয়ার-টেবিল আসবাবপত্র ও জানালা দরজা ভাঙচুর করে। এ নির্বাচন মানেন না বলেও তারা স্লোগান দেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এগিয়ে গেলে তারা উপজেলা পরিষদের সামনের গেটে অবস্থান নেন। এর পর থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে পুলিশের সঙ্গে।
এ বিষয়ে জানতে পরাজিত প্রার্থী তোফায়েল আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ডোমার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিন আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় ডোমার নির্বাচন কার্যালয়ের কার্যালয় সহকারী ফারুক হোসেন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় পাঁচজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শরিফুল ইসলাম/এসকেডি