নাটোরে এক রাতেই ৭০ হাজার চামড়া সংগ্রহ

ঈদের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (১৮ জুন) সামান্য পরিমাণে কাঁচা চামড়া আসছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার মোকাম নাটোরের চকবৈদ্যনাথের আড়তগুলোতে। মূলত যারা ঈদের দ্বিতীয় দিন কোরবানি করেছেন তারাই আজকে নিয়ে আসছেন চামড়া। এ ছাড়া ঈদের দিন সোমবার (১৭ জুন) বিকেল থেকে সারা রাত চামড়া সংগ্রহ করেছেন নাটোরের দুই শতাধিক চামড়া ব্যবসায়ী। সেসব চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন আড়তদার ও শ্রমিকরা।
চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন বিকেল থেকে গত রাতে অন্তত ৭০ হাজার পিস চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। গতবারের তুলনায় চামড়ার দামও বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তারা।
চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা জানান, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলার মৌসুমি ব্যবসায়ী ও মাদরাসাগুলো নাটোরের চামড়া সরবরাহ করে। এতে এক দিনেই নাটোরের আড়তগুলোতে গরুর চামড়া ৪৫ থেকে ৫০ হাজার পিস এবং খাসির ২০ থেকে ২৫ হাজার পিস কাঁচা চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। তবে লবণযুক্ত চামড়া আসতে সময় লাগবে আরও সপ্তাহখানেক। আগামী সপ্তাহে দেশের ২৫ থেকে ৩০ জেলার লবণযুক্ত চামড়া আসবে চকবৈদ্যনাথের আড়তে। এরপর ট্যানারি মালিক ও তাদের প্রতিনিধিরা চামড়া সংগ্রহ করবেন।
সোমবার রাতে চামড়ার মোকাম নাটোরের চকবৈদ্যনাথ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কোরবানির চামড়া আড়তে আনছেন ফরিয়া ও মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। তবে বেশ কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী ও মাদরাসা থেকে চামড়া নিয়ে আসা বিক্রেতারা জানান, দাম নিয়ে কারসাজি করছেন বড় ব্যবসায়ীরা।

নলডাঙ্গা থেকে গরুর চামড়া নিয়ে আসা মালেক আলী ঢাকা পোস্টকে জানান, তিনি প্রতি পিস চামড়া ১২০০-১৩০০ টাকা দরে কিনে এনেছেন। কিন্তু এখানে দাম ১ হাজার টাকার উপরে বলছে না।
চামড়া বিক্রি করতে আসা নলডাঙ্গা উপজেলার একটি মাদরাসার শিক্ষক বলেন, ভ্যানভর্তি করে চামড়া নিয়ে এসেছি। গড়ে দাম বলে চামড়া কিনেছেন এক ব্যবসায়ী। বেছে বেছে ভালোগুলো নিয়ে এখন বলছে দাম কম দেবে। প্রশাসনের এগুলো নজরদারি করা দরকার।
মাদরাসা ও এতিমখানার সংগৃহীত গরু-ছাগলের কাঁচা চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণে জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিলেও বেশকিছু জায়গায় এসব লবণের ব্যবহার না করার ঘটনাও ঘটেছে।
জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ লুৎফর রহমান বলেন, প্রতিবছর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা না বুঝে চামড়া কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তারা চামড়া পেলেই কিনে নেন। কিন্তু সে চামড়ার মান, আকার ও লবণ দ্বারা সংরক্ষণের মাত্রা অনুযায়ী আমরা চামড়া কিনে থাকি। কাঁচা চামড়া লবণ দ্বারা আরও ২/৩ দিন আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। সে অনুযায়ী আমরা ন্যায্য দামেই চামড়া ক্রয় করছি।
চামড়ার বাজার পরিদর্শনে এসে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাছুদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিং করছি। গতবারের চেয়ে এবার চামড়ার দামও বেশি। ছোট ছোট কিছু অভিযোগ শুনেছি এবং তাৎক্ষণিক সেগুলো সমাধান করেছি। চামড়ার আড়তদাররা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন কোনো ব্যবসায়ী বিক্রেতাদের হেয় করার চেষ্টা করলে তারাই সেগুলোকে নিভৃত করবেন।
গোলাম রাব্বানী/এমজেইউ