খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা এখন জেলা আ.লীগের উপদেষ্টা

সম্মেলনের প্রায় দেড় বছর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরিত একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা গ্রহণ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। তবে সেই কমিটিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টার পদ থেকে বহিষ্কৃত নেতা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান কমিটির উপদেষ্টার পদ পেয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০২২ সালের গত ১২ নভেম্বর। জেলা শহরের নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের শুধু জেলা কমিটির সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার, সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, হাজী মো. হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টুর নামসহ পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেন।
সেই সম্মেলনের প্রায় দেড় বছর পর বৃহস্পতিবার কমিটির তালিকায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষর করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সভাপতি গণপূর্ত ও গৃহায়ণমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী হলেও পরিবর্তন হয়েছে সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের নাম। তার মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন মাহবুবুল বারী চৌধুরী। আর পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে মাহবুবুল বারী চৌধুরীকে এবার সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত করা হয়।
কমিটিতে উপদেষ্টা করা হয়েছে ১৮ জনকে। সহ-সভাপতি হিসেবে আছেন ১১ জন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে তিনজনকে। সদস্য হিসেবে আছেন ৩৬ জন।
সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, মো. হেলাল উদ্দিন (২) মেয়র নায়ার কবির, সৈয়দ মিজানুর রেজা, কামরুজ্জামান আনসারী, সুমেশ রঞ্জন রায়, গোলাম মহিউদ্দিন খোকন, মো. শাহজাহান আলম সাজু, ডা. মো. আবু সাঈদ, প্রিন্সিপাল আবুল খায়ের ও কাজী হারিসুর রহমান।
আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মফিজুর রহমান বাবুল। দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আবুল কালাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. শাহ আলম (হালদার পাড়া), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোস্তফ কামাল, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফরহানা সিদ্দিক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক অধ্যাপক নুরুন্নাহার, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক স্বপন রায়, শ্রম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. ডিউক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. মহসিন, তানজিল ও সৈয়দ এখতেসামুল বারী তানজিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, কোষাধ্যক্ষ সম্পাদক হাজী মো. মহসিন মিয়া।
সদস্যবৃন্দ- আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিছুল হক এমপি, এ.বি.তাজুল ইসলাম এমপি, অ্যাডভোকেট শাহ আলম, মঈন উদ্দিন মঈন এমপি, এবাদুল করিম বুলবুল, ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, হাজী মো. মুসলিম মিয়া, শিউলী আজাদ, জহিরুল ইসলাম ভূইয়া, আল আমিন হক আলামিন, অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদিন, এম এ এইচ মাহবুব আলম, জায়েদুল হক, ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম নবী, আবুল হোসেন, অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, অ্যাডভোকেট বাকির উদ্দিন, মোরশেদ কামাল, আবু আব্বাস, মাহমুদুর রহমান জগলু, সায়েদুজ্জাম আরিফ, অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার জীবন, সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট শিব শংকর দাস, গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সেলিম রেজা হাবিব, রফিকুল ইসলমা, বাবুল মিয়া, হাজী বাবুল মিয়া, ডা. আশীষ চক্রবর্তী, মিনারা আলম, জাহাঙ্গীর আলম, আলহাজ মো. নাজির মিয়া, হাসান সারোয়ার, মোবারক হোসেন রতন।
১৩ জনের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য-আরমা দত্ত এমপি, অ্যাডভোকেট আবু আমজাদ, কাজী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল হাই, আজিজুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হেফজু মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবু তাহের, বীর মুক্তিযোদ্ধা দিলীপ কুমার নাগ, অমৃত লাল সাহা, সোহাস দাস চৌধুরী, রেহেনা বেগম রানী, মমতাজ বাসার, সুভাষ পাল, মিজানুর রহমান, আব্দুল আওয়াল, এম.এ তাহের, এ.কে.এম একরামুজ্জামান এমপি ও বোরহান উদ্দিন।
৭৫ জনের এই কমিটিতে নতুন পদ পেয়েছে অনেকেই। আর সেই নতুনদের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টার পদ থেকে বহিষ্কৃত নেতা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান। ১৮ জন উপদেষ্টার মধ্যে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আরমা দত্তের নাম ১ নম্বরে এবং সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানের নাম ১৭ নম্বরে রয়েছে।
আর এ কে সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং খালেদা জিয়ার সাবেক এই উপদেষ্টা গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে ওই আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রামকে হারিয়ে নির্বাচিত হন।
নির্বাচিত হওয়ার পর রাজধানীর উত্তরা বোট ক্লাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দেন একরামুজ্জামান। এসময় গণপূর্ত মন্ত্রীও তাকে আওয়ামী লীগে বরণ করে নেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, একরামুজ্জামান দল ছেড়েছে। তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। আ.লীগের পদ পেল কি পেল না সেটা বিএনপির দেখার বিষয় না।
কমিটির বিষয়ে মাহবু্ুবুল বারী চৌধুরী মন্টু বলেন, জেলা আওয়ামী লীগ এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সংগঠিত ও শক্তিশালী। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণায় নেতা-কর্মীরা আরও উজ্জীবিত হবেন।
মাজহারুল করিম অভি/এমএএস