তেঁতুলিয়ায় কৌশলে চা শ্রমিকদের ভাতা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র

উত্তরের চায়ের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সরকারের চা শ্রমিকদের দেওয়া ৫ হাজার টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছেন হ্যাকাররা। তারা ভাতাভোগীদের মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে নিজেদের সমাজসেবা অফিসের লোক পরিচয় দিয়ে হাতিয়ে নেন এসব টাকা। উপজেলায় কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী চা শ্রমিকরা বলছেন, কয়েকদিন আগে মোবাইলে নগদ পেমেন্টের মাধ্যমে সরকারের দেওয়া ৫ হাজার টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসছে। ফোন দেওয়া ব্যক্তিরা নিজেদের সমাজসেবা কার্যালয়ের লোক চলে পরিচয় দেয়। পরে তাদের ফোনে পাঠানো ওটিপি কৌশলে নিয়ে হাতিয়ে নেন এসব টাকা।
জানা যায়, সরকার চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে প্রতিবছর চা শ্রমিকদের জন্য এককালীন অর্থ সহায়তা হিসেবে ৫০০০ টাকা দিয়ে আসছে। সে হিসেবে এ বছর তেঁতুলিয়া উপজেলায় ৪৫৫ জন চা শ্রমিক পেয়েছেন আর্থিক সহায়তা। এসব টাকা ভাতাভোগীদের নগদ অ্যাকাউন্টে চলে যায়। সেই টাকা কৌশলে ভাতাভোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র।
এ বিষয়ে কথা হয় ভুক্তভোগী মিজানুরের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার মোবাইলে সরকারের দেওয়া এককালীন ৫ হাজার টাকা আসে। এর কিছুক্ষণ পর একজন ফোন দেন। তিনি নিজেকে কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে টাকার বিষয়ে জানতে চান। এরপর তিনি বলেন, আপনার মোবাইলে একটি পিন নম্বর গেছে সেটি আমাদেরকে দেন। তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টে আরও কিছু টাকা যাবে। এরপর আমি সেই কোড তাদের দিয়ে দেই। পরে জানতে পারি আমার অ্যাকাউন্টে আসা ৫ হাজার টাকা তারা নিয়ে গেছে।
আলাউদ্দিন নাম আরও একজন বলেন, আমাকেও সমাজসেবা অফিসের পরিচয়ে একজন ফোন দিয়েছিল। গত শুক্রবার বিকেলে আবার ফোন দিলে জানাই সমাজসেবা কর্মকর্তারা তো শুক্রবার ফোন দেয় না। আপনি কেন বারবার ফোন দিচ্ছেন। আপনার পরিচয়টা দেন এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
এমন প্রতারণার শিকার শুধু মিজানুর না তেঁতুলিয়া উপজেলার হাসমত, আজহারুলসহ আর অনেকেই হয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে সমাজসেবা অফিসে গেলে তারা বলেন, কীভাবে প্রতারক চক্র ভাতাভোগীদের নম্বর পেল তা আমাদের জানা নেই। তবে উপকারভোগীদের অজ্ঞতার কারণেই তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। আমাদের অফিস থেকে কোনো ভাতাভোগীকে ফোন দিয়ে ওটিপি চাওয়ার কথা না।
তেঁতুলিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহ-আল আমিন বলেন, শুধু চা শ্রমিক না, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার ক্ষেত্রেই এরকম অভিযোগ পাচ্ছি। আসলে একটি চক্র এভাবে ওটিপি পাঠিয়ে সহজ-সরল মানুষদের প্রতারিত করছে। তাই এ বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে। কখনোই কাউকে তাদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কোনো পাসওয়ার্ড, ওটিপি নম্বর দেওয়া যাবে না। আমরা বারবার বলে দেই, সচেতন থাকতে। তারপরেও এমন ঘটনা ঘটছে।
এসকে দোয়েল/এএএ