ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সড়ক ছাড়লেন বেরোবি শিক্ষার্থীরা

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কার ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে অবরোধ তুলে নেন তারা।
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর ১২টায় রংপুরের মর্ডান মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। দেড় ঘণ্টা অবরোধ শেষে দুপুর পৌনে ২টার দিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। যতদিন দাবি আদায় না হবে ততদিন আমরা ক্লাসে ফিরব না। আজ আমরা ক্যাম্পাসে যাচ্ছি। পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাব।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এই বৈষম্যমূলক কোটাপ্রথা মানি না। কোটার কারণে মেধাবীরা সঠিক মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কোনো মেধাবী শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ৮০ পেয়েও চাকরি পাবে না, আর কোটাধারীরা সহজেই চাকরি পাবে, এই বৈষম্য সংবিধান পরিপন্থি।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে-মেয়ে পর্যন্ত কোটা ঠিক ছিল। নাতি-নাতনি বিষয়টা অযৌক্তিক। এক শতাংশ প্রতিবন্ধী বাদে সব কোটা বাতিল করতে হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা বাতিল চাই, বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘চাকরিতে কোটা, মানি না, মানবো না’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, কোটার ঠাঁই নাই’, ‘শেখ মুজিবের বাংলায়, কোটার ঠাঁই নাই’, ‘কোটা পদ্ধতি নিপাত যাক মেধাবীরা মুক্তি পাক’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের বিষয়ে বেরোবি প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। পরে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে চলে যায়।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করেছিলেন কিছু সময়ের জন্য। পরে তারা আবার রাস্তা ছেড়ে চলে গেছেন।
শিপন তালুকদার/জেডএস