১০ দিনে পশ্চিম রেলওয়ের পাকশী বিভাগের ক্ষতি ১৫ কোটি টাকা

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও চলমান কারফিউয়ের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পাকশী রেলওয়ে বিভাগের প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা করে আয় কমছে। এতে ১৯ জুলাই থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত গত ১০ দিনে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন বন্ধ থাকায় আয় কমেছে ১৫ কোটি টাকার বেশি।
পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সূফি নূর মোহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পাকশী রেলওয়ে বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পাকশী রেল বিভাগের আওতাধীন ১১৪টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। এরমধ্যে আন্তঃনগর ৫৬টি, মেইল ও লোকাল ট্রেন ৫৮টি। এর বাইরে মালবাহী ও তেলবাহী ট্রেন চলাচল করে।
আরও পড়ুন
এদিকে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার কারণে বেশ দুর্ভোগে পড়েছেন ঈশ্বরদীসহ উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার ট্রেনযাত্রীরা। কম খরচে, দ্রুত সময়ে এবং কম ভোগান্তিতে বিভিন্ন গন্তব্যে মানুষ ট্রেনকে বেশি নিরাপদ মনে করেন। তাই ট্রেন চলাচল না করার কারণে সড়ক পথে ভেঙে ভেঙে দ্বিগুণ খরচে দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য লোকজনকে ছুটতে হচ্ছে ছোট ছোট যানবাহনে।
পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই রাত থেকে ঢাকাসহ সারাদেশের সঙ্গে পাকশী রেল বিভাগের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পাকশী রেলবিভাগে প্রতিদিন যাত্রী ও মালবাহী ট্রেনে গড়ে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আয় হয়। ১৯ জুলাই রাত থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ১৫ কোটি টাকারও বেশি রেলের আয় কমেছে। গত সোমবার থেকে শুধুমাত্র তেলবাহী ট্রেন পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করছে।
পাকশী রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) একেএম নূরুল আলম জানান, ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পাকশী রেলের আয় কমছে। পাকশী রেলওয়ে বিভাগের প্রতিদিনের আয় সঠিকভাবে নিরূপণ করা যায় না। আয়ের পরিমাণ কম-বেশি হয়। অফিস বন্ধ থাকায় আয়ের সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। অফিস চালু হলে এ বিষয়ে সঠিক হিসাব জানানো যাবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের প্রকৌশলী-২ বীরবল মণ্ডল বলেন, যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো বিভিন্ন গন্তব্যস্থলে কড়া নিরাপত্তা দিয়ে রাখা রয়েছে। রেল মন্ত্রণালয় থেকে ট্রেন চালুর বিষয়ে এখনো নির্দেশনা আসেনি। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও কারফিউয়ের কারণে পাকশী প্রকৌশল বিভাগেই ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। পাকশী রেলওয়ে বিভাগের যাত্রীবাহী সব ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি রয়েছে, এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ট্রেন চলাচল শুরু করা হবে।
পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সূফি নূর মোহাম্মদ বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে পাকশী রেলের প্রতিদিন ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার মতো আয় কমেছে। ১৯ জুলাই রাত থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। গত সোমবার থেকে শুধু পশ্চিমাঞ্চলে বিশেষ নিরাপত্তায় তেলবাহী ট্রেন চলাচল করছে। আমরা আশা করছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই হয়তো দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আরও দু-একদিনের মধ্যে আশা করছি, হয়তো বা পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সব যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
রাকিব হাসনাত/জেডএস