গুলিবিদ্ধ সাজুর মৃত্যু, তার ১৫ দিন বয়সী ছেলের নাম ‘আবু সাঈদ’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট সকালে গাজীপুরে গুলিবিদ্ধ হন সাজু ইসলাম (২৬)। সোমবার (১২ আগস্ট) ভোররাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সাজু ইসলাম পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার টোকরাভাষা মিরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজহার আলীর ছেলে। তিনি ২০১৫ সালে টোকরাভাষা তহিবননেছা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। সাজু গত ৪-৫ বছর ধরে গাজীপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। সেখানে তিনি একাই থাকতেন। পরিবার থাকতো গ্রামে। সাজুর বাবা আজহার আলী রিকশাচালক। চার ভাই-বোনের মধ্যে সাজু বড়। গত দেড় বছর আগে বিয়ে করেন সাজু। দাম্পত্য জীবনে তার ১৫ দিন বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পর তার ছেলে হলে নাম রাখা হয় আবু সাঈদ। সাজুর দুই বোন নাজমুন নাহার, নিলুফা আক্তার ও ছোট ভাই রাজু আহম্মেদ। এদের মধ্যে দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট ভাই লেখাপড়া করছে।
আরও পড়ুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী ও সাজুর চাচাতো মাহবুব জানান, স্বৈরাচার সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সরকার পতনের দিন গাজীপুর মাওনা হতে একটি মিছিল বের হয়েছিল। মাওনা থেকে ছাত্রজনতা মিছিলটি নিয়ে গণভবনের দিকে যেতে চায়। ওই সময় ময়মনসিংহ থেকে সাতটি পিকআপ ভ্যানে করে বিজিবি ও পুলিশ এসে গুলি করতে থাকে। ওই সময় পুলিশের গুলি দুই দফা সাজুর পিঠে লেগে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে প্রথমবার অপারেশন করা হয়। কিন্তু সফল না হওয়ায় দ্বিতীয়বারের অপারেশনে গুলি বের করা হয়। ৫ আগস্ট থেকে সাজু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ সোমবার ভোররাতে মারা যায়।
এদিকে তার বাবা ময়মনসিংহ থেকে ছেলের মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। সাজুর মৃত্যুতে পরিবারে বইছে শোকের মাতম। আজ বিকেল ৫টার দিকে গ্রামের বাড়িতে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে সহ যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং শ্রমিক অধিকার পরিষদের রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক আসাদুজ্জামান নুর আসাদ সাজুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন।
এসকে দোয়েল/এমজেইউ