ফরিদপুরে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
ফরিদপুর সদর উপজেলা ভূমি অফিসের (এসি ল্যান্ড) সার্ভেয়ার মো. রাইসুল ইসলামের বিরুদ্ধে সেবা গ্রহিতার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার এ কাজের জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী মো. রাতুল শেখ (২৫)।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সম্রাট হোসেনকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মো. রাতুল শেখ শহরের গোলালচামট মহল্লার মোল্লাবাড়ি সড়কের মো. সোহেল শেখের ছেলে। রাতুল শেখ লিখিত অভিযোগে বলেন, তিনি তার জমির নামজারির জন্য প্রায় ১ মাস ধরে অফিসের এ টেবিল থেকে অন্য টেবিলে ঘুরছেন। কেউ কোনো কথা বলে না, কাজও করে দেয় না। অফিসের পিয়নরা বলে আমার কাছে দেন আমি কাজ করে দেই। তাদের কাছে গেলে তারা বলে আরও কিছু অতিরিক্ত টাকা লাগবে তাহলে কাজ হয়ে যাবে। তবে আমি টাকা দিতে রাজি হইনি।
অভিযোগে তিনি আরও বলেন, নামজারির জন্য সরকারি ফি লাগে এক হাজার একশ টাকা। আর তারা এক হাজার ছয়শ টাকা দাবি করেন।
রাতুল শেখ বলেন, আজ অফিসে একই কাজের জন্য ১৫তম বার গেলাম। আজ অফিসের সার্ভেয়ার মো. রাইসুল ইসলামের নিয়োগ করা দালাল সোহেল রানা আমার কাছে এসে কিছু অতিরিক্ত চাঁদা দাবি করে। পরে ছাত্র-জনতার সহায়তায় জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছি।
ফরিদপুর সদরের বিল মাহমুদপুর এলাকার বাসিন্দা এক নারী জানান, ওই অফিসে সার্ভেয়ার মো. রাইসুল ইসলামের হয়ে দালালী করেন সোহেল রানা নামে এক ব্যক্তি। সার্ভেয়ার সোহেল রানার মাধ্যমে সেবা গ্রহিতাদের কাছ থেকে এ বাড়তি টাকা তোলেন।
সার্ভেয়ার মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, সোহেল রানার বাড়ি মানিকগঞ্জ। তিনি এই অফিসের কর্মচারী নন। ফাইলপত্র এগিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন কাজে তাদের সহায়তা করেন সোহেল রানা।
এ খবর পেয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতারা ভূমি অফিসে যান। তারা এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেন এবং এসিল্যান্ডের সাথে কথা বলেন। এসি ল্যান্ড এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে তাৎক্ষণিকভাবে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।
ফরিদপুর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে শুরু থেকে যুক্ত আবরার নাদিম বলেন, ফরিদপুর সদর ভূমি অফিসের অধিকাংশ কর্মচারীরাই দুনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ফরিদপুর জেলার প্রতিটা ভূমি অফিসেই গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হয়।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে ফরিদপুর সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সম্রাট হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সেটা জেলা প্রশাসক বরাবর পঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। আমি খোঁজ নিয়ে প্রতিবেদন দেব।
জহির হোসেন/আরকে