ছাত্র-জনতার আন্দোলন গুলি করে দমিয়ে রাখা যায় না : বুলবুল
দীর্ঘ ১৮ বছর পর নোয়াখালীতে প্রকাশ্যে সভা করেছে জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত জেলা শহরের পৌরবাজারে আঞ্চলিক সড়কের ওপর এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে সভাস্থলে জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, ২০০৬ সালের পর থেকে প্রকাশ্যে সভা করার অনুমতি ও সুযোগ কোনোটিই পায়নি নোয়াখালী জেলা জামায়াতে ইসলামী। দীর্ঘ ১৮ বছর পর শহরের প্রাণকেন্দ্রে এমন প্রাণোচ্ছ্বল সভা করতে পেরে উচ্ছ্বসিত জামায়াতের নেতাকর্মীরা। সভা শেষে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রাজনীতি হবে মানুষের জন্য, রাজনীতি হবে জনগণের জন্য। সেই রাজনীতিকে ব্যবহার করে স্বৈরাচার সরকার যেভাবে ছাত্র-জনতার ওপর হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, সেই হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনার বিচার বাংলার মাটিতে করতে হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে গুলি করে দমিয়ে রাখা যায় না। অথচ ছাত্র-জনতাকে পাখির মতো গুলি করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল স্বৈরাচার হাসিনা সরকার। তার এই স্বপ্ন মিছে গুড়ে বালি হয়ে গেছে। এ দেশে শুধু ছাত্র-জনতার হত্যার বিচার নয়, এদেশে ২৮ অক্টোবর, শাপলা চত্বরেরও বিচার হবে। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত এবং নির্যাতিত সকল নেতাকর্মীর পুনর্বাসন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচার সরকার রাষ্ট্রকে গুম, খুন ও আয়নাঘরে পরিণত করেছে। স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকার ও তার দোসরদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী মানুষের জন্য রাজনীতি করে। সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করে। তাই জামায়াতে ইসলামীকে কখনো জনবিচ্ছিন্ন করা যাবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করার জবাব শেখ হাসিনাকে দিতে হবে। এদেশের ছাত্র-জনতা এক হয়েছে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী রাজনীতি চলতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনার দোসররা যদি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়, তাদের প্রতিহত করতে জামায়াতে ইসলামী প্রস্তুত আছে।
নোয়াখালী শহর জামায়াতের আমির মো. ইউসুফের সভাপতিত্বে ও শহর জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মো. মায়াজের সঞ্চালনায় পথসভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসাইন, নোয়াখালী জেলা আমির মাওলানা ইসহাক খন্দকার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. কামাল হোসাইন, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আবু সাঈদ, নোয়াখালী শহর জামায়াতের আমির মাওলানা ইউসুফ, ছাত্রশিবির শহর শাখার সভাপতি সাঈদুল হক সুমন, নোয়াখালী সদর উপজেলার আমির মাওলানা হাফেজ মহিউদ্দিন, জেলা জামায়াতের কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।
হাসিব আল আমিন/আরএআর