বাগেরহাটে হাসপাতালে ঢুকে তিন চিকিৎসককে মারধর
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিন চিকিৎসককে মারধর করা হয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ২০-২৫ জনের একটি দল হাসপাতালে প্রবেশ করে এই হামলা করে। এ সময় উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) চন্দন দাসের মুঠোফোন ও মানিব্যাগ ছিনতাই করা হয়েছে বলেও অভিযোগ আহতদের।
জানা যায়, দুপুরে ২০-২৫ জনের একটি দল হাসপাতালের মধ্যে এসে জরুরি বিভাগ থেকে চন্দন দাসকে টেনে হিঁচড়ে বের করে নেন। জরুরি বিভাগের সামনে বসেই বেধরক মারধর করতে থাকেন। এ সময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তনুশ্রী ডাকুয়া ও মেডিকেল অফিসার ডা. রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা ঠেকাতে আসেন। তখন এই দুই চিকিৎসককেও মারধর করেন হামলাকারীরা।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা বলেন, স্থানীয় মো. শিমুল শেখ নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল জরুরি বিভাগ থেকে চন্দন দাসকে বের করে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। আমি এবং জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তনুশ্রী ডাকুয়া ঠেকাতে গেলে হামলাকারীরা আমাদেরও মারধর করে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায়কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। শিমুলের সাথে ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস-এর শাহিন ও একমি ফার্মাসিউটিক্যালস-এর রাব্বিও হামলায় অংশ নেন। হাসপাতালে ভেতরে এ ধরনের ঘটনা আমাদের খুবই হতাশ করেছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা হামলাকারীদের বিচার চাই।
চন্দন দাস বলেন, জরুরি বিভাগের কাজ রোগীদের সেবা দিচ্ছিলাম। আমাকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে জরুরি বিভাগের সামনে বসেই মারধর করতে থাকে হামলাকারীরা। তারা আমার মুঠোফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে গেছে।
এদিকে হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হলে কর্মবিরতির ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায় বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় সেনাক্যাম্পে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। থানায় অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
শর্মী রায় আরও বলেন, শিমুলের বাড়িতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার সাবেক স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মুফতি কামাল হোসেন একটি বেসরকারি ক্লিনিক করেছেন। তিনিই এই হামলার নেপথ্যে রয়েছেন।
এ বিষয়ে ডা. মুফতি কামাল হোসেনের মুঠোফোনে কল দিলে অন্য এক ব্যক্তি কল রিসিভ করে বলেন স্যার এখন আর এই নাম্বার ব্যবহার করেন না।
আরও পড়ুন
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুদ্দিন বলেন, চিকিৎসকদের মারধরের বিষয়টি জানতে পেরে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। চিকিৎসকদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ দিলে আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মো. শিমুল শেখের মুঠোফোনে বারবার ফোন করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা চিকিৎসকদের জন্য খুবই হতাশাজনক একটা ব্যাপার। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে হামলার কারণ এবং হামলাকারীদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে অবহিত করা হবে।
শেখ আবু তালেব/এনএফ