ঢাকায় না গেলে তো চাকরি থাকতো না

কষ্ট কইরা বাড়ি আইছি আবার কষ্ট কইরাই কর্মস্থলে যাইতাছি। পরিবারের সদস্যদের লগে ঈদ করবার পারছি, এইডাই শান্তি। বাড়িত না আইলে তো তাগোও ভালা লাগতো না।
কথাগুলো বলেছেন ঈদের ছুটি কাটিয়ে ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে ফেরা মো. সোলাইমান হোসেন। তিনি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ভোগান্তি নিয়েই কর্মস্থলে ফিরছেন।
সোলাইমানের মতো ভোগান্তি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে হাজারো কর্মজীবী নারী-পুরুষকে। সিএনজি, নছিমন, করিমন, ট্রাক, মাইক্রোবাসে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন সবাই।
রোববার (১৬ মে) দুপুরে নগরীর পাটগুদাম সেতু মোড়ে দেখা যায়, যানজটের কারণে শম্ভুগঞ্জ থেকে কয়েক কিলোমিটার হেঁটেই আসছেন যাত্রীরা। তারা বলছেন, সোমবার থেকে খুলছে পোশাক কারখানা ও টেক্সটাইল মিল। তাই যে করেই হোক কর্মস্থলে যেতে হবে।
হাঁটতে হাঁটতে কথা হয় সাভারগামী মঈনুল ইসলামের সঙ্গে। ফিরেছেন গৌরীপুর থেকে। তিনি চাকরি করেন নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডে। সপরিবারে যাচ্ছেন কর্মস্থলে।
মঈনুল বলেন, সবাইকে নিয়ে গ্রামে ঈদ করতে না পারলে আনন্দ পাওয়া যায় না। গ্রামে বাবা-মা থাকেন। তাদের তো আশা থাকে। সেজন্যই গ্রামে আসা। এখন কাল থেকে অফিস যেহেতু খোলা; তাই যেভাবেই হোক পৌঁছাতে হবে।
হঠাৎ চোখে পড়ল একটি মিনি ট্রাকে গাদাগাদি করে যাচ্ছেন একসঙ্গে ১৫ জন। এ সময় কথা হয় হাসনা আক্তার নামে আরেক পোশাককর্মীর সঙ্গে।
তার ভাষ্য, কালকা থেইক্যা কারখানা খোলা। হেলেইজ্ঞা পুলাপান লইয়া ট্রাকো কইরাই রওনা দিছি। না গেলে তো চাকরি থাকতো না।
এ সময় দেখা গেল ঢাকাগামী ঈমান পরিবহনের একটি বাসও যাত্রী নিয়ে এসেছে হালুয়াঘাট থেকে। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। সরকারি নির্দেশনা না মানার কারণ জানতে চাইলে বাসের হেলপার বলেন, বেহেই ত গাড়ি লইয়া বাহির অইছে। তাই আমরাও বাহির অইলাম।
ময়মনসিংহের ট্রাফিক পরিদর্শক সৈয়দ মাহবুব রহমান বলেন, ঢাকাগামী কর্মজীবী মানুষের চাপ বাড়ার কারণে সড়কে গাড়িও বেড়েছে। তাই কিছু কিছু স্থানে যানজট দেখা যাচ্ছে। তবে যানজট নিরসনে কাজ করছে পুলিশ। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় যানজট বেশিক্ষণ থাকবে না।
উবায়দুল হক/এএম