শ্যামপুর চিনিকল বন্ধ করা ছিল জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তে শ্যামপুর চিনিকল দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন আখচাষি ও চিনিকল রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। রংপুর অঞ্চলের অর্থনীতি বাঁচানো ও বেকার সমস্যা দূরীকরণে দ্রুত শ্যামপুর চিনিকল চালুর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে রংপুর সদর উপজেলার শ্যামপুর চিনিকল গেট সংলগ্নে আয়োজিত জনসভা থেকে এ দাবি জানানো হয়। শ্যামপুর চিনিকলসহ বন্ধ সকল চিনিকল চালু, শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং আখচাষিদের রক্ষার দাবিতে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।
আখচাষি ও চিনিকল রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত জনসভায় বক্তারা বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তের ফলে শ্যামপুর চিনিকল পাঁচ বছর যাবত বন্ধ আছে। এই চিনিকল হাজার হাজার আখচাষি, শত শত শ্রমিক এবং শ্যামপুর অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল। চিনিকলটি বন্ধ হওয়ায় এই অঞ্চলের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। শ্যামপুর অঞ্চলের মানুষকে বাঁচাতে এই চিনিকল অবিলম্বে চালু করতে হবে।
আখচাষি ও চিনিকল রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ শ্যামপুরের আহ্বায়ক মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য দেন চিনিকল পুনঃচালুকরণ টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মানস নন্দী, শ্রমজীবী আন্দোলনের সভাপতি হারুনার রশীদ ভূঁইয়া, গার্মেন্টস ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ আখচাষি ইউনিয়ন জাতীয় কমিটির সভাপতি আনসার আলী দুলাল, শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম, শ্রমজীবী সংঘের সভাপতি আবদুল আলী, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রেজা।
এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন আখচাষি ও চিনিকল রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ রংপুর জেলা আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল আলম মোস্তফা, সেতাবগঞ্জ চিনিকল পুনঃচালনা আন্দোলন পরিষদের সদস্যসচিব ইসমাইল হোসেন, আখচাষি রবিউল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সেতাবগঞ্জের নেতা রোজী, শ্যামপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হযরত আলী, তরুণ আখচাষি ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য রাব্বী হোসেন প্রমুখ। জনসভা সঞ্চালনা করেন বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা সদস্যসচিব আহসানুল আরেফিন তিতু।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অপরিসীম আত্মত্যাগের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন হয়েছে। সেই ফ্যাসিবাদী সরকারের শ্যামপুর চিনিকল বন্ধের জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিনিকল চালু করা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৈতিক ও অবশ্যকরণীয় কর্তব্য। আমরা মনে করি শহীদ আবু সাঈদের জেলাকে প্রধান উপদেষ্টা এক নম্বরে নেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা বাস্তবায়নে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়ত অতীতের মতো রংপুর উন্নয়নে পিছিয়ে পড়া জেলা হিসেবে অবহেলিত থাকবে।
এর আগে বিকেল থেকে চিনিকল এলাকায় ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সমবেত হন আখচাষি, ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগী কর্মচারীসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। মিছিল থেকে তারা বন্ধ থাকা শ্যামপুর চিনিকল চালুকরণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমজেইউ