মাকে বাঁচাতে মেয়ের আকুতি

মৌসুমী সুলতানার (৩৮) দুটি কিডনিই নষ্ট। স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে স্বল্প বেতনের চাকুরে আশরাফ উদ্দিন খান এখন সর্বশান্ত। তাই মায়ের চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহ করতে মরিয়া কলেজ পড়ুয়া একমাত্র মেয়ে তাহমিন খানম সাদিয়া। অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে নিজের লেখাপড়াই বন্ধের পথে।
তাহমিন খানম সাদিয়া জানান, ২ বছর ধরে তার মা অসুস্থ। মায়ের কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন। এতো টাকা তার বাবার পক্ষে দেয়া সম্ভব না। এদিকে, দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন না করা গেলে তার মায়ের বাঁচার আশা ক্ষীণ। নিরুপায় হয়ে কয়েকদিন ধরে একাই লড়ে চলেছেন মায়ের জন্য অর্থ জোগাড়ে।
পাবনা শহরের শালগাড়িয়া এলাকায় তাদের বাসা। বাবা পাবনা মানসিক হাসপাতালের সহকারী নার্স হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ২০২০ সালে স্কয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পান সাদিয়া। একই প্রতিষ্ঠানে কলেজ শাখায় ভর্তি হলেও তার এখন একমাত্র চিন্তা তার মা সুস্থ হবে তো?
বর্তমানে তার মা মৌসুমী সুলতানা (৩৮) সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের নেফ্রলোজিস্ট প্রফেসর মহিবুর রহমানের চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মায়ের চিকিৎসার খরচ কিভাবে জোগাড় করবেন এই চিন্তায় ভেঙে পড়েছেন এই মেধাবী শিক্ষার্থী। কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ইতোমধ্যে দেড় লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি টাকা জোগাড় করতে না পারলে মাকে বাঁচানো যাবে না।
সাদিয়ার বাবা আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, আমি পাবনা মানসিক হাসপাতালে অল্প বেতনে চাকরি করি। আমার পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করা সম্ভব না। কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি যদি আমার স্ত্রীর চিকিৎসায় সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতেন তাহলে দুই হাত তুলে আল্লাহর দরবারে তার জন্য দোয়া করতাম।
পাবনা মানসিক হাসপাতালের সুপারভাইজার মকুলেট মেরি বলেন, পরিবারটি বড়ই অসহায়। তাদের সহযোগিতার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত। আমাদের মানসিক হাসপাতালের স্টাফদের পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছি।
পাবনা মানসিক হাসপাতালের নার্সিং সুপারেনটেনডেন্ট রিতা আলম বলেন, মৌসুমীর স্বামী আমাদের এখানে যে বেতনে চাকরি করেন সেটা দিয়ে এ ধরনের রোগীর চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। আমাদের পক্ষ থেকে কিছু সহায়তা করেছি, সামনে আরও সহায়তা করা হবে। অল্প দিনের মধ্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করা না গেলে মৌসুমির মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পাবনা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজিবুল হাসান রবিন বলেন, সাদিয়ার আম্মার যে অবস্থা তাকে বাঁচানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার দুইটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। আমার পক্ষ থেকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করেছি।
তিনি আরও বলেন, সবার উচিত একজন অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমাদের একার পক্ষে এতো টাকা দেয়া সম্ভব নয়। তবে পৌরসভার মেয়র বরাবর একটা দরখাস্ত দেয়ার কথা বলেছি। দরখাস্ত দিলে আমরা বড় ধরনের সহযোগিতা করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
সাদিয়ার মায়ের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা পাঠানোর ঠিকানা: আশরাফ উদ্দিন ( স্বামী), সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ০১০০০৪৩৩৮৩১৮৮, জনতা ব্যাংক কর্পোরেট শাখা, পাবনা। মুঠোফোন নম্বর ০১৭২৬৩১৬৮২৭।
এসপি