ভারতীয়দের উসকানিতে ফ্যাসিস্টরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়

কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেছেন, আমরা ৫ আগস্ট হাসিনাকে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করেছি। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে নেই। এখনো সেই ফ্যাসিস্ট সরকার আধিপত্যবাদী ভারতীয়দের উসকানিতে বাংলাদেশে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমান আমরা একসঙ্গে মিলেমিশে আছি, তাদের সেটা ভালো লাগে না। এখানে তারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে চায়। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে তারা হাসিনা বা হাসিনার মতো আরেকটি শাসক নিযুক্ত করতে চায়।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজবাড়ীতে কৃষক দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে র্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, সবার আগে আমাদের বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে যদি ভালোবাসেন দলমত নির্বিশেষে আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে আমাদের যে ভাইরা রক্ত দিয়েছেন তাদের সঙ্গে আমরা বেইমানি করতে পারব না, করব না। সেজন্য শেখ হাসিনা ও তার প্রেতাত্মারা যে যেখানে আছে এবং তাদের প্রভু যারা রয়েছেন স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, কোনো হুমকি-ধমকি দিয়ে কাজ হবে না। বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। আমরা আমাদের মর্যাদা নিয়ে থাকব। আমরা বন্ধুত্ব চাই, আমরা কারও প্রভুত্ব মানি না, মানব না।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের কৃষকের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিগত ১৫ বছর বাংলাদেশের কৃষক তাদের উৎপাদিত পণ্যের মূল্য পায়নি। কৃষকের যে কৃষিসামগ্রী তা বছর বছর দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেজন্য আগামী দিনে আমাদের সরকার যদি সুযোগ পায় আমরা কৃষকদের জন্য ইউনিয়নে ইউনিয়নে শস্য ক্রয় কেন্দ্র করব। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি আমরা কৃষকদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করব। কৃষকদের কোনো কারণে ফসল নষ্ট হয়ে গেলে আমরা কৃষকদের কৃষি বিমা প্রবর্তন করব। বাংলাদেশের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের যাতে ন্যায্যমূল্য পায় সেজন্য প্রতিটি ইউনিয়নে ক্রয় কেন্দ্র করা হবে। আমরা বাংলাদেশের কৃষকদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চাই। শহীদ জিয়াউর রহমান বলেছিলেন কৃষক না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না। বাংলাদেশের ৭০ ভাগ মানুষ এখনো কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের কৃষক উৎপাদন না করলে বাংলাদেশের অর্থনীতি চলে না, উন্নয়ন হয় না, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন হয় না। ৫ তারিখ (আগস্ট) এসেছে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য, ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের জন্য না।
কৃষক দলের সেক্রেটারি বলেন, রাজবাড়ীতে দলের মধ্যে অনেক গ্রুপিং, অনেক দ্বন্দ্ব। কিন্তু কৃষক দলের মধ্যে কোনো গ্রুপিং নেই। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলে কোনো গ্রুপিং নেই। আমি আমার নেতাকর্মীদের বলতে চাই, দয়া করে কৃষক দলের মধ্যে কোনো গ্রুপিং ও টানাটানি করবেন না। আপনারা কৃষক দলকে কেউ বিভক্ত করার চেষ্টা করবেন না। এই কৃষক দলের দায়িত্ব যখন তারেক রহমান কৃষিবিদ তুহিন ও আমার হাতে দিয়েছেন তখন বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষক নিয়ে স্বপ্নের কথা তিনি আমাদের বলেছেন। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা জাতীয়তাবাদী কৃষক দল বাংলাদেশের সাড়ে চার হাজার ইউনিয়নে কাজ করছি।

জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মো. আইয়ুবুর রহমানের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব একেএম সিরাজুল আলম চৌধুরী বক্তব্য দেন।
এর আগে, কৃষক দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে রাজবাড়ী পৌরসভার সামনে এসে জড়ো হন। পরে জেলা কৃষক দলের আয়োজনে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। র্যালিটি রাজবাড়ী পৌরসভার সামনে থেকে বের হয়ে শহরের ১নং রেলগেট এলাকা প্রদক্ষিণ করে আবার একই স্থানে এসে শেষ হয়। র্যালির নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল।
র্যালিতে জেলা কৃষক দলসহ পাঁচ উপজেলা থেকে আগত হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এমজেইউ