রাতের আঁধারে বনের গাছ কাটতে গিয়ে আটক, দুজন কারাগারে

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় সংরক্ষিত সরকারি বাগানে রাতের আঁধারে গাছ কাটার সময় আটক দুজনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) হাতিয়া জুডিশিয়াল কোর্টের মাধ্যমে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
এর আগে ১১ জানুয়ারি রাতে হাতেনাতে তাদের আটক করে জাহাজমারা সদর বিটের বনরক্ষীরা। এসময় তাদের কাছে গাছ কাটার কুড়াল ও দা জব্দ করা হয়।
কারাগারে প্রেরণকৃতরা হলেন, হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত বেছু মাঝির ছেলে সাহারাজ (৫০) ও একই ওয়ার্ডের মদিন সর্দারের ছেলে আলতাফ হোসেন (৪০)।
আরও পড়ুন
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১১ জানুয়ারি রাতে চর ইউনুছ ও হাজীর গোপট এলাকায় বনরক্ষীরা দেখতে পান ৪-৫জন লোক কুড়াল দিয়ে গাছ কাটছে। কেউ কেউ দা দিয়ে গেওয়া চারা গাছ কেটে জমি পরিষ্কার করছে। এসময় বনরক্ষীদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাহারাজ ও আলতাফ হোসেনকে আটক করে বনরক্ষীরা।
তবে অন্য ৩ জন দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থলে আসামিদের কাটা আনুমানিক ৮০০টি ১ ফুট বেড়ের গেওয়া চারা গাছ ও রিং করা কেওড়া গাছের বাকল, একটি কুড়াল ও একটি দা জব্দ করা হয়।
জাহাজমারা সদর বিটের বিট অফিসার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসামিরা সংরক্ষিত বনে অনধিকার প্রবেশ করে সরকারি গাছ কেটে পরিবেশ ও রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধন করছে। তারা জমি তৈরির উদ্দেশে আনুমানিক ১.৫ একর জমির চারা গাছ এবং ১৫টি কেওড়া গাছের গোড়ায় বাকল কেটে রিং করেছে। এতে সরকারি বাগানের সর্বমোট ১২ লাখ ৮০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । বনের জমি জবরদখলের চেষ্টা করায় তাদের বিরুদ্ধে ১৯২৭ সালের বন আইনে (২০০০ সালে সংশোধিত) মামলা করা হয়।
জাহাজমারা রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম সাইফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, জাহাজমারা এলাকার ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের ম্যানগ্রোভ বন এলাকা বিগত সরকারের আমল থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিতি এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় বন উজার এবং বনভূমি জবর দখলের অপচেষ্টা চলছে। সরকার পরিবর্তনের পরেও বন ধ্বংসকারীরা থেমে নাই। এ বিষয়ে বিগত সময় হইতে শতাধিক বন মামলা হলেও আসামিগণ মামলাকে কোন প্রকার ভয় না পেয়ে তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, জাহাজমারার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের আন্তরিক সহযোগিতা না থাকলে বন বিভাগের একার পক্ষে বন রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। জাহাজমারা বন বিভাগের বিট কর্মকর্তাসহ সকল স্টাফ বন রক্ষার্থে টহল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
হাসিব আল আমিন/এমএসএ