নিম্নমানের আলুর বীজে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

নিম্ন মানের আলুর বীজ বপন করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মানিকছড়ি উপজেলার কয়েকজন কৃষক। ক্ষতিগ্রস্ত এক কৃষকের লিখিত অভিযোগ পেয়ে সরব হয়েছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। কারণ চিহ্নিত করতে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন, মানিকছড়ি বাজারের বীজ ডিলার প্রকাশ বীজ ভাণ্ডার থেকে এসিআই কোম্পানির উন্নত জাতের আলুর বীজ কিনে জমিতে বপন করেছেন। বপন করা বীজের কিছু চারা গজালেও অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। বিষয়টি বীজের ডিলার দুলাল চন্দ্র মজুমদারকে জানালে বিষয়টি সুরাহা না করে উলটো কৃষককে শাসাচ্ছেন। নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
আলু চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব চেঙ্গু ছড়া এলাকার কৃষক আব্দুল সোবহান জানান, প্রকাশ বীজ ভাণ্ডার থেকে ৬শ কেজি আলুর বীজ কিনে জমিতে লাগিয়েছেন তিনি। কিছু বীজ থেকে চারা গজালেও অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। বীজ ডিলার দুলাল চন্দ্র মজুমদারকে অভিযোগ জানালে তিনি উলটো হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।
একই এলাকার আরেক চাষি মো. সুমন মিয়া জানান, তিনি এক কানি (৪০ শতক) জমিতে আলু চাষ করেছেন। প্রকাশ বীজ ভাণ্ডার থেকে তিন মন আলুর বীজ ক্রয় করেছিলেন। জমিতে রোপণের পর অনেক বীজ না গজানোয় এখন খরচের টাকা উঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
একই উপজেলার এয়াতলং পাড়া এলাকার কৃষক আলী আহম্মদ জানান, তিনিও দুলালের কাছ থেকে আলুর বীজ নিয়ে রোপণ করেছেন। পাশাপাশি কুমিল্লা থেকেও কিছু বীজ এনে রোপণ করেছেন। দুলালের কাছ থেকে নেওয়া বীজগুলো তেমন না গজালেও কুমিল্লা থেকে এনে লাগানো অন্য জাতের আলুর সব বীজ গজিয়েছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তামিম আজিজ জানান, কৃষক সোবহানের অভিযোগের ভিত্তিতে জমি পরিদর্শন করতে আসেন। আলুর বীজ শতভাগ না গজানোর কারণেই প্রতিটি সারিতেই কমবেশি ফাঁকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মানিকছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জহির রায়হান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর কৃষকের জমি পরিদর্শন করেছেন। প্রকাশ বীজ ভাণ্ডারের মালিক এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানির প্রতিনিধিকে আগামী বৃহস্পতিবার তার কার্যালয়ে ডেকেছেন। তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আফরোজ ভুঁইয়া বলেন, নিম্ন মানের আলুর বীজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষক—এমন একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ তদন্তে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোহাম্মদ শাহজাহান/এএমকে