বাজেটে শিক্ষা খাতে ২৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবি

শিক্ষা খাতে বাজেটের ২৫ শতাংশ বরাদ্দ ও শিক্ষার্থীদের করোনার ভ্যাকসিন দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলাসহ চার দফা দাবিতে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। মঙ্গলবার (২৫ মে) বেলা ১১টায় শহরের পাঁচুরমোড় মসজিদ মার্কেটের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান রাশেদ, সাবেক সভাপতি উৎপল দেবনাথ, জেলা ছাত্রফ্রন্টের দফতর সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সদস্য শাহিদুল ইসলাম, সীমা পাহান প্রমুখ।
তাদের চার দফা দাবিগুলো হলো- জাতীয় বাজেটের ২৫ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ, শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতির জন্য বাজেট বরাদ্দ, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা এবং অনলাইন ক্লাসের জন্য বিনামূল্যে ডিভাইস ও ইন্টারনেটের জন্য বাজেট বরাদ্দ করা।
এ সময় বক্তারা বলেন, করোনায় সারাদেশে সংকটময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে কৃষি-স্বাস্থ্য- শিক্ষা সকল খাতে বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ প্রয়োজন। আগামী জুন মাসে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়ন করা হবে। বরাবরই অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে শিক্ষা খাতকে অবহেলা করা হয়।
একটি দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে ও দেশকে এগিয়ে নিতে শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক। ইউনিসেফের প্রস্তাবনায় একটি দেশের জাতীয় আয়ের শতকরা ৮ ভাগ অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রতি বছরই শিক্ষা খাতের পর্যাপ্ত বরাদ্দকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
গত ১০ বছরে শিক্ষার ব্যয় এতো বেড়েছে যে প্রাথমিক স্তর শেষ করে মাধ্যমিক স্তরেই লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। সারাদেশে উচ্চ শিক্ষা লাভের সুযোগ সংকুচিত করা হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণায় নামে মাত্র বরাদ্দের কারণে শুধু সার্টিফিকেট সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংকট ক্রমাগত ঘনীভূত হচ্ছে। গত কয়েক বছরে দফায় দফায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও সংকট নিরসনে পর্যাপ্ত বরাদ্দের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
তারা আরও বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। অর্থনৈতিক সংকটের এ সময়ে অসংখ্য পরিবারে যখন বেঁচে থাকাই কঠিন তখন শিক্ষা ব্যয় নির্বাহ একটি বাড়তি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুস্থ শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ প্রয়োজন।
আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবাসিক ব্যবস্থার অভাবে দেশব্যাপী লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীকে মেস ভাড়া করে থাকতে হয়। শহরের মেসগুলোতে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগই টিউশনি করে চলত। অনেকে পরিবারেও কিছুটা সহযোগিতা করত। লকডাউনে দুই মাস আদের টিউশন নেই। শিক্ষার্থীরা মেসে না থাকলেও মেস মালিকরা দুই মাসের বকেয়া ভাড়া আদায়ের চেষ্টা করছে। এই সংকট নিরসনে সংকটগ্রস্ত মেসের শিক্ষার্থীদের মেসের ভাড়া পরিশোধের জন্য বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ প্রয়োজন।
একইসঙ্গে এ বছরের ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা এবং অনলাইন ক্লাসের জন্য বিনামূল্যে ডিভাইস ও ইন্টারনেটের জন্য বাজেট বরাদ্দ করতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রের এ সকল সংকট বিবেচনায় এনে আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে জাতীয় বাজেটের ২৫ ভাগ শিক্ষা খাতে বরাদ্দের দাবি জানান তারা।
চম্পক কুমার/এসপি