খুলনায় ওসিকে অপসারণে বিএনপির ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে ব্যর্থ হওয়ায় খুলনা মহানগরীর সকল থানার ওসিদেরকে (অফিসার্স ইনচার্জ) অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানিয়েছে খুলনা বিএনপি। বিশেষ করে খুলনা সদর থানা এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতি হওয়ায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনীর উল গিয়াসকে অপসারণের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় খুলনার জেলা প্রশাসক ও মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তর ঘেরাও কর্মসূচিসহ খুলনা অচল কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে সমাবেশ থেকে এ দাবি জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।
খুলনা মহানগরীতে আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি, ৩০নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আমির হোসেন বোয়িং মোল্লা ও ২১নং ওয়ার্ড যুবদলের সহ সভাপতি মানিক হাওলাদার হত্যাকাণ্ড, ২৭নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহিন ও ছাত্রদল কর্মী নওফেলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মহানগর ও জেলা বিএনপি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে বিএনপি নেতারা বলেন, গত পাঁচ মাসে পুলিশ প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় খুলনার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। একের পর এক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। বিএনপির দুইজনসহ গত ৪ মাসে মহানগরীতে ১০টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এছাড়া মাদক ব্যবসা বন্ধ, বিভিন্ন মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার, খুন, জখম, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেলেও পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করছে না। পুলিশের সঙ্গে সখ্যতা করে অপরাধীরা নগরীতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এতে নগরবাসী চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের দায়িত্বে থাকার কোনে অধিকার নেই।
তারা আরও বলেন, খুলনার অলিতে-গলিতে মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে। কিন্তু পুলিশ এ অপরাধ দমনে কার্যত কোনো ভূমিকা রাখছে না। ৩০ নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা আমিন মোল্লা বোয়িং, ২১নং ওয়ার্ড যুবদলের সহ-সভাপতি মানিক হাওলাদারকে হত্যা করা হয়েছে । কিন্তু হত্যাকারীরা ধরা পড়েনি। মানিক নিহত হওয়ার আগে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেওয়ার পর পুলিশ মামলা নেয়। পরবর্তীতে একজনকে আটক করা হলেও অজ্ঞাত কারণে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই সন্ত্রাসীকে ছেড়ে দেওয়া না হলে আজ মানিক হত্যাকাণ্ড ঘটতো না।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের সাথে গোপন বৈঠক করছে। বিএনপি অফিস ভাঙচুর মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। নগরীর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকরা চরম নিরাপত্তায় রয়েছে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, স. ম আ রহমান, অ্যাডভোকেট নুরুল হাসান রুবা, খান জুলফিকার আলী জুলু, কাজী মাহমুদ আলী, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, তৈয়েবুর রহমান, মাহাবুব হাসান পিয়ারু, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, গাজী তফসির আহমেদ, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, একরামুল হক হেলাল, মাসুদ পারভেজ বাবু, শেখ সাদি, হাসানুর রশিদ চৌধুরী মিরাজ, এনামুল হক সজল, কে এম হুমায়ূন কবির (ভিপি হুমায়ূন), হাফিজুর রহমান মনি, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী বাবু, মো. মুরশিদ কামাল, কাজী মিজানুর রহমান, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, শেখ ইমাম হোসেন, হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস আসাদুজ্জামান আসাদ, ফকরুল আলম, সুলতান মাহমুদ, সাহিনুল ইসলাম পাখি, রুবায়েত হোসেন বাবু, আরিফ ইমতিয়াজ খান তুহিন, অ্যাডভোকেট মাসুম রশিদ, বিপ্লবুর রহমান কুদ্দুস, অ্যাডভোকেট চৌধুরী তৌহিদুর রহমান তুষার, একরামুল কবীর মিল্টন, নাজির উদ্দিন নান্নু, আহসান উল্লাহ বুলবুল, শেখ জামাল উদ্দিন, আফসার উদ্দিন, আনসার আলী, নাসির খান, আব্দুস সালাম, আলমগীর হোসেন, ,কাজী শাহ নেওয়াজ নিরু, আব্দুর রহমান ডিনো প্রমুখ।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর