ভৈরবে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত ৪০

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকার মহাখালী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ৩৩ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ছাড়াও অন্যান্য আহতরা বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন— ভৈরবপুর এলাকার শাহার বেগম (৫০), রামশঙ্করপুর এলাকার নারায়ণ চন্দ্র (৪৫), মাজেদা (৪২), দীপ (১১), ৭ বছরের শিশু ফরিহা ইসলাম, মৌসুমি (৯), ৬ বছরের শিশু আব্দুর রহমান, তানজিনা (১০), রফিয়া (২৭), রাতুল (২০), মারুফা (১৭), রাজন (১৭), ইতি (২৫), ৪ বছরের শিশু আলেয়া, সাড়ে চার বছরের শিশু গাফফার, রায় (১২), উপজেলার গোছামারা গ্রামের সুইটি (১৬), সখিনা (৩০), রাবিয়া (১৩), চাঁনপুর গ্রামের ফরিদা বেগম (৫৫), রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (৫০), শিমুলকান্দি গ্রামের আয়েশা (৩৫), জামালপুর এলাকার ৩ বছরের শিশু আদিল, রিয়াদ (১০) শিবপুর গ্রামের মুনতাহা (২৭),পৌর শহরের চণ্ডিবের এলাকার আব্দুর রহমান (১১), আসমা (৪৮) জান্নাত (৫) সাহেরা (৮০), ইয়ামিন (১২), ঈশান (১৪), আমলাপাড়া এলাকা ৬ বছরের শিশু হুসাইন।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকেল থেকে শহরের কালিপুরের রামশঙ্কপুর এলাকা থেকে কুকুরে কামড়ানো শুরু করে। পর্যায়ক্রমে শহরের চণ্ডিবের, গাছতলাঘাট এলাকায়, ভৈরবপুর এলাকায় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকার সামনে পথচারী, শিশুসহ বেশ কয়েকজন নারী পুরুষকে রাত পর্যন্ত কামড় দিয়ে আহত করে।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া বলেন, বাড়ি রসুলপুর যাচ্ছিলাম এমন সময় হঠাৎ একটি কুকুর আমাকেসহ বেশ কয়েকজনকে কামড় দেয়।
আহত আসমা বেগম জানান, হঠাৎ একটি কালো কুকুর যাকে পাচ্ছে তাকেই কামড় দিচ্ছে দেখে কোনো রকম দৌড়ে প্রাণে বেঁচে যাই। মুহূর্তটা ভোলা যাবে না।
আহত পথচারী বাচ্চু মিয়া বলেন, আমার নিজ বাড়ি রসুলপুর যাচ্ছিলাম হঠাৎ একটি কুকুর আমাকেসহ বেশ কয়েকজনকে কামড় দেয়। পরে আমি দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে দেখি অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছে।
এ বিষয়ে রামশঙ্করপুর এলাকার আহত রাজন মিয়া বলেন, আমি বাড়ির সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটি কুকুর এসে আমাকে কামড় দেয়। আমি পড়ে গেলে দ্বিতীয় দফায় আমাকে কামড়ায়। আমার সঙ্গে আরও ১০\১৫ জনকে কামড়িয়ে আহত করে। আমরা কুকুরটিকে আটকানোর অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. উম্মে হাবিবা জুই জানান, এখন পর্যন্ত আমাদের হাসপাতালে ৩৩ জনের মতো হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় দুইজনকে ঢাকা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কুকুরটি শনাক্ত করতে পারলে বোঝা যাবে হাইড্রোফোবিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে কি না। কুকুরটি যদি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয় দ্রুত ভ্যাকসিন দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ১৫ দিন আগে বেশ কয়েকজনকে পাগলা কুকুরে কামড়িয়েছিল। আহতরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছিল। সোমবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত পাগলা কুকুরের কামড়ে ৩৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন বলেন, এমন একটি ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমি বিষয়টি খোঁজখবর নিচ্ছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি কুকুরটি পাগল হওয়ার কারণ নিশ্চিত করে তারপর কুকুরটি দ্রুত শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার তা চেষ্টা করব।
এনামুল হক হৃদয়/এমএ