আগামী বছর টঙ্গীতে ইজতেমা না করার শর্তে অনুমতি পেলেন সাদপন্থিরা

আগামী ১৪, ১৫ এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি টঙ্গীর ময়দানে তাবলিগ জামায়াত বাংলাদেশের (মাওলানা সাদ অনুসারী) বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। তবে এক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শর্ত দেওয়া হয়েছে, আগামী বছর থেকে টঙ্গী ময়দানে তারা ইজতেমা ও তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সাঈদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, টঙ্গীর ময়দানে আগামী বছর থেকে ইজতেমা এবং তাবলিগি কার্যক্রম না করার শর্ত পূরণ সাপেক্ষে এ বছর দ্বিতীয় পর্বে শুধুমাত্র ১৪—১৬ ফেব্রুয়ারি সাদপন্থিরা বিশ্ব ইজতেমা করতে পারবেন।
প্রজ্ঞাপনে, বিশ্ব ইজতেমা—২০২৫ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনটি সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
১. তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের শুরায়ী নেজামের অনুসারীরা (মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়ের) ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ইজতেমা ৫ ফেব্রুয়ারি সম্পন্ন করে ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব ইজতেমা ময়দান প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করবেন।
২. তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (মাওলানা সাদ অনুসারী) বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব আগামী ১৪—১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ১৮ ফেব্রুয়ারি বাদ মাগরিব তারা ইজতেমা ময়দান প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করবেন।
তবে আগামী বছর থেকে তাদের বিশ্ব ইজতেমা ও তাবলিগি কার্যক্রম টঙ্গীস্থ ইজতেমা ময়দানে করতে পারবেন না। এই শর্ত পূরণ সাপেক্ষে শুধুমাত্র ১৪—১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে ইজতেমা করতে পারবেন।
৩. আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ইজতেমা ময়দান শুরায়ে নিজামের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল করিম খান জানিয়েছেন, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা মাঠ মাওলানা সাদের অনুসারীদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আর আগামীকাল বুধবার প্রথম পর্বের ২য় দফার আখেরি মোনাজাত হবে দুপুর ১২টায়।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ইজতেমা মাঠ নিয়ন্ত্রণে নেবে পুলিশ। পরদিন শুক্রবারও পুলিশের কাছেই থাকবে। শনিবার মাওলানা সাদের অনুসারীদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে।
সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে জানিয়ে নাজমুল করিম খান বলেন, এবার মোনাজাতের সময় যান চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। সকলের প্রতি অনুরোধ মোনাজাতের সময় রাস্তায় কেউ বসবেন না।
তিনি বলেন, প্রথম পর্বের প্রথম ধাপের ইজতেমা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার থেকে দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়। পুরো মাঠ ৩৬৫টি সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। পেট্রোল, মোবাইল এবং চেকপোস্ট ডিউটির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। মাঠের ভেতরে আমাদের সদস্যরা সাদা পোশাকে কাজ করছেন। প্রথম পর্বের প্রথম ধাপের মতো আমরা সবার সহযোগিতায় দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমাও সুন্দরভাবে করতে চাই।
মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক মোহাম্মদ সায়েম বলেন, আমাদের ইজতেমা ১৪ ফেব্রুয়ারি হবে। আমরা সরকারের কাছ থেকে বৈষম্যমূলক আচরণ চাই না। সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে মুরব্বিরা মাশোয়ারা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। মাশোয়ারাতে যে সিদ্ধান্ত আসবে তা পরবর্তীতে জানানো হবে।
শিহাব খান/আরএআর