গাইবান্ধায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় মামলা

গাইবান্ধায় সাবেক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা ও বিপিএলে সিলেটের নেট ফাস্ট বোলার মামুনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন আহমেদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, দুপুরে নিহত মামুনের বাবা আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে সাদুল্লাপুর থানায় এই মামলা দায়ের করেন।
মামলায় নামীয় আসামি করা হয়েছে ২৭ জনকে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে আরও ২০ থেকে ২২ জন।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মামুনকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেওয়া হয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট বন্দরের জামদানি ঘাট এলাকায় অতর্কিত হামলা চালিয়ে মামুনকে হত্যা করা হয়।
ঘটনার পর এদিন অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে নিহত মামুনের মরদেহ নিয়ে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তার স্বজন ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অবরোধ করায় মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। অনেক যাত্রী হেঁটেও রওনা হন গন্তব্যে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিচার নিশ্চিতের আশ্বাসে সাময়িকভাবে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ধাপেরহাট নায়বিয়া দরবার শরিফ ও মাজারের জায়গা নিয়ে দোকানিদের সঙ্গে মামুনের বিরোধ চলছিল। একই বিষয় নিয়ে বুধবার রাতে মামুন ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা এবং পরে এক ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনাও ঘটে। এর জেরে বৃহস্পতিবার বিকেলে জামদানির ঘাট এলাকায় মামুনের ওপর হামলা চালায় ১০-১২ জন। তারা মামুনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্বজনরা হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মামুনের মৃত্যু হয়।
পরিবারের অভিযোগ, ব্যবসায়ীদের কয়েকজন পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে মামুনের ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তারা মামুনের হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে হত্যা করে।
পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, মামুন এক সময় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি থাকলেও গেল কয়েক বছর ধরে তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে ক্রিকেট খেলা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সর্বশেষ তিনি বিপিএলে সিলেটের নেট ফাস্ট বোলার ছিলেন মামুন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা থেকে ধাপেরহাটের নিজ বাসায় ফিরেছিলেন তিনি।
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজ উদ্দীন খন্দকার বলেন, মামুনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ২৭ জনকে নামীয় এবং ২০ থেকে ২২ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি তদন্ত করছে পুলিশ। এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলেও নিশ্চিত করেন ওসি।
রিপন আকন্দ/এএমকে