মাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাকে হত্যার দায়ে ছেলে রুবেল মোল্লাকে (৩৮) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার ১৭ (ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক ড. মো. আলমগীর এ রায় দেন।
আসামি রুবেল মোল্লা শ্রীনগর উপজেলার পশ্চিম বাঘরা মোল্লাবাড়ি এলাকার মৃত শমসের মোল্লার ছেলে।
ঘটনার পর থেকে রুবেল জেল হাজতে আটক ছিল। রায়ের সময় আসামিকে আদালতে আনা হলে রায়ের পর পুনরায় তাকে জেলা কারাগারকে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হাছান ছারওয়াদী।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে আসামি রুবেল মোল্লা তার মায়ের কাছে রাতের খাবার চান। মায়ের দেওয়া খাবারে সন্তুষ্ট না হওয়ায় রুবেল হাতের প্লেট ছুঁড়ে ফেলে দেন। এ সময় রুবেলের মা নুরজাহান বেগম পুনরায় তাকে খাবার দিলে আসামি রুবেল ক্ষিপ্ত হয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে তার মা নুরজাহান বেগমের (৬৫) মাথায় সজোরে আঘাত করেন।
এ সময় নুরজাহান বেগম চিৎকার করে ঘর থেকে বের হয়ে উঠানে পড়ে যান। এ সময় রুবেল তাকে পুনরায় মাথায় আঘাত করেন। বাঁশের লাঠির আঘাতে নুরজাহান বেগম ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। তখন আশপাশের লোকজন এসে রুবেলকে আটক করে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়।
ঘটনার পর মৃত নুরজাহান বেগমের সুরাতহাল রিপোর্টের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় নুরজাহান বেগমের অপর ছেলে শ্রীনগর উপজেলার বাগরা মোল্লাবাড়ি এলাকার মৃত শমসের মোল্লার ছেলে আক্কাস মোল্লা (৫০) বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই ঘটনায় প্রায় সাত বছর পর আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামি রুবেলকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, ২০১৭ সালে শ্রীনগর উপজেলায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নিজের মাকে হত্যার দায়ে আসামি রুবেল মোল্লাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। এ রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট প্রকাশ করছি।
ব.ম শামীম/এএমকে