ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: নোয়াখালীর ৯২ ইউনিয়নে আড়াই লাখ টাকা করে বরাদ্দ

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উচ্চ জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত নোয়াখালী জেলার ৯২টি ইউনিয়নের প্রতিটিতেই আড়াই লাখ টাকা করে বরাদ্দ করেছে সরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্তের জন্য মোট ২৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (২৮ মে) সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, নোয়াখালী হলো উপকূলীয় জেলা। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই অঞ্চলের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করতে আরও সময় লাগবে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে সহায়তা করার জন্য সবাইকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক এলাকায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জেলার ৯২টি ইউনিয়নের প্রতিটিতেই আড়াই লাখ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। ইয়াসের প্রভাবে এবার বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে কিংবা বাঁধ উপচে পানি ঢুকে অনেক এলাকার ঘেরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চল সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ কিছুটা কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ অঞ্চল হাতিয়া উপজেলা। হাতিয়ার প্রায় সব গ্রামে জোয়ারের পানি রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী রোববার (৩০ মে) দুপুর ১২টার পর আমরা আপনাদের ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারব।

নোয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মোতালেব হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাতিয়া উপজেলার ৩ হাজার ৫০টি মৎস্য পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ২০০ ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে চাষিদের ১৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
নোয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বিপুল কৃষ্ণদাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে বড় গাছের ক্ষতি হয় না। মূলত চারাগাছের ক্ষতি হয়। গত দুই বছরে যেসব নতুন বাগান হয়েছে, সেগুলো ক্ষতি হবে। বর্তমানে উপকূলে জোয়ারের পানি রয়েছে। জোয়ারের পানি ভাটায় নামামাত্র আমাদের কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট পাঠাবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. শহীদুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবারের জোয়ারের পানি অধিক লবণাক্ত হওয়ায় ফসলের ক্ষতির পরিমাণ বেশি। তবে জোয়ার আসা বন্ধ হলে ক্ষয়ক্ষতির আরও সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করা যাবে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাতিয়া উপজেলার ১২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। তার মধ্যে সোনাদিয়া, তমরদ্দি ও চরকিং ইউনিয়নে ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পানি প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া অনেক স্থানে বেড়িবাঁধের ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। বেড়িবাঁধের সংস্কার অব্যাহত আছে।
হাসিব আল আমিন/এনএ