শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধে সড়ক অবরোধ

শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, মামলা প্রত্যাহার ও লে-অফ ঘোষণা করে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ফতুল্লার ইউরোটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে রাখেন। এ সময় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা।
এর আগে আজ সকালে ৯৭ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করলে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন। এতে সিনিয়র কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকদের মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকরা। এরপর শ্রমিকরা নারায়ণগঞ্জ সড়কে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকরা জানান, বেতন না দিয়ে পূর্বনির্দেশনা ছাড়াই তাদের ৯৭ জন শ্রমিককে জোরপূর্বক ছাঁটাই করেছে কর্তৃপক্ষ। এর জের ধরে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করলে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় সিনিয়র কর্মকর্তারা। এতে ১৫ জন শ্রমিক আহত হয় বলে জানায় তারা।
অজুফা বেগম নামের আহত এক শ্রমিক বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের শ্রমিকদের ছাঁটাই করে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত মাসের বেতনও দেয়নি। এতে আমরা কাজ বন্ধ করে দিলে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমি হাতে গুরুতর আঘাত পাই।
মো. আরিফ হোসেন নামের আহত এক শ্রমিক বলেন, মালিকপক্ষ আমাদের ৯৭ জন লোককে ছাঁটাই করে দিলে আমরা কাজ বন্ধ করে দিই। কারণ কর্তৃপক্ষ আমাদের বলেছিল ঈদের আগে কাউকে ছাঁটাই করবে না। এটা নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে আমাদের ওপর হামলা করে ১৫ জন শ্রমিককে মারধর করে। এতে আমার হাতের রগ কেটে যায়।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা ইউরোটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেডের মালিককে ছাড়া কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, কয়েক দফা চেষ্টা করেও শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরানো সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার নয়ামাটি এলাকায় অবস্থিত রপ্তানিমুখী ইউরোটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেড পোশাক কারখানায় প্রায় ৩ হাজার ৭০০ শ্রমিক কাজ করেন। শ্রমিকেরা এক মাসের বকেয়া বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করে আসছিলেন। শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় কারখানায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কারখানার কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বাদী হয়ে চাকরিচ্যুত ২৭ শ্রমিককে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে কারখানার শ্রমিকরা মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন।
মেহেদী হাসান সৈকত/এমজেইউ