দুপুরে আজহারীর মাহফিল, আগের রাতে মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ

বিশিষ্ট ইসলামি বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক ওয়াজ মাহফিলে বয়ান পেশ করবেন। এই মাহফিলকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে ১০ থেকে ১২ লাখ মানুষের সমাগম উপলক্ষে আয়োজন সম্পন্ন করেছে মাহফিল কমিটি। এ উপলক্ষে শহরের মহারাজপুর ইউনিয়নের ঘোড়াস্ট্যান্ড-সংলগ্ন মাঠে তাফসিরুল কুরআন মাহফিলে প্রায় অর্ধলাখ মানুষের সমাগম ঘটেছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌঁছে জোহর নামাজ শেষে বয়ান পেশ করার কথা রয়েছে মিজানুর রহমান আজহারীর। এই বিষয়টি মিজানুর রহমান আজহারী তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে নিশ্চিত করে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘রাজশাহী বিভাগের বন্ধুরা, ইনশাআল্লাহ আগামীকাল থাকছি—এসহাক উদ্দিন মিঞা আম্রকানন ময়দান, লালাপাড়া মোড়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জাবালুন নূর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত তাফসিরুল কুরআন মাহফিলে। আসুন, দেখা হবে, কথা হবে।’

আয়োজক কমিটির সূত্র থেকে জানা যায়, জনসমাগম বিবেচনা করে দর্শকদের জন্য আটটি মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রাণকেন্দ্র মহারাজপুর ইউনিয়নের ঘোড়াস্ট্যান্ডের পাশের আমবাগান মাঠে করা হয়েছে মূল মঞ্চ। এই মূল মাঠ ছাড়াও আশপাশে পুরুষদের জন্য তিনটি ও নারীদের জন্য চারটি আলাদা মাঠের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মূল মাঠে চারটি প্রজেক্টরসহ সব মাঠে থাকবে প্রজেক্টরের ব্যবস্থা। এ ছাড়া সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের জন্য রয়েছে জেনারেটর। পাশাপাশি ফ্রি ওয়াইফাই, স্যানিটেশন, পর্যাপ্ত সুপেয় পানি, অজুখানার ব্যবস্থা, ইন্টারনেট সচল রাখার জন্য গ্রামীণফোনের টাওয়ার, রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দল ও রয়েছে মেডিক্যাল ক্যাম্প।
এ ছাড়া জাবালুন নূর ফাউন্ডেশন এই ঐতিহাসিক মাহফিলের আয়োজন করছে। এ মাহফিলে সভাপতিত্ব করবেন জাবালুন নুর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবু জার গিফারী এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল।
আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য হাফেজ গোলাম রাব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মূল প্যান্ডেলসহ সব কাজ সমাপ্ত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। সুতরাং বিগত মাহফিলে ঘটে যাওয়া চুরি-ছিনতাই এখানে ঘটবে না বলে আমরা আশা করছি। এরপরও সবদিক বিবেচনা করে আমরা কাজ করছি। মাঠের প্রবেশ পথেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে দামি স্বর্ণালংকার পরিধান না করতে নারীদের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত টয়লেট, পানির ব্যবস্থা, খাবার হোটেল, প্রকাশনা স্টল, মেডিকেল টিম, ও পরিবহন রাখার জন্য প্রায় ১৬টি গ্যারেজের সুব্যবস্থা করা হয়েছে।
মাহফিলের সভাপতি মাওলানা আবু জার গিফারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাহফিল সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে মাহফিলের মাঠগুলোতে। পুরো শহরে সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে বক্তা ও অতিথিগণের বক্তব্য শুনতে পারবে মানুষ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ড. মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে পুলিশ। যানজট নিরসনে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে এবং জননিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত আছে।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশের বাইরে নির্বাসিত ছিলেন বিশ্ববরেণ্য মুফাসসির ড. মিজানুর রহমান আজহারী। গত ৫ আগস্ট দেশ থেকে শেখ হাসিনা সরকার পালিয়ে গেলে দেশে ফিরে আসেন মিজানুর রহমান আজহারী। এরপর দেশের মানুষের আগ্রহে বিভিন্নস্থানে মাহফিল শুরু করেন তিনি। যার ধারাবাহিকতায় আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাহফিল করবেন মিজানুর রহমান আজহারী।
মো. আশিক আলী/এএমকে