কুমিল্লায় শিশু-শেরপুরে কিশোরী শ্রমিক ধর্ষণ; বগুড়ায় মামলা

মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে দেশ। বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণবিরোধী মিছিল, সমাবেশ হয়েছে। তবে এসবের মধ্যেও থেমে নেই ধর্ষণ। নানান জায়গা থেকে এসেছে ধর্ষণের খবর—
কুকুরের কামড়ের ভয় দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণ
কুমিল্লার লালমাইয়ে কুকুর দিয়ে কামড়ানোর ভয় দেখিয়ে ৭ বছর বয়সী এক শিশুকে তিনদিন ধর্ষণ করেছেন ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে সালিশ বসে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাকে। তাবে সালিশ চলাকালে সেখানে উপস্থিত হয় যৌথবাহিনী। এ সময় ভুক্তভোগী শিশুর বর্ণনা শুনে ওই বৃদ্ধকে আটক করা হয়।
শনিবার (৮মার্চ) রাতে লালমাই উপজেলার উত্তর বেলঘর এলাকায় চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে। আটক আবাদ উল্যাহ (৭০) ওই এলাকার বাসিন্দা।
লালমাই থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, ভুক্তভোগী শিশুটি স্থানীয় একটি মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে ফেরার পথে শিশুটিকে কুকুর দিয়ে কামড়ানোর ভয় দেখিয়ে গ্রামের এক ব্যক্তির পরিত্যক্ত রান্নাঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন আবাদ উল্যাহ। ১০ দিনের ব্যবধানে একইভাবে শিশুটিকে তিনি তিনবার ধর্ষণ করেন তিনি। গত শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে বাড়ির অন্য শিশুদের মাধ্যমে জানতে পেরে তার মা জিজ্ঞাসা করলে শিশুটি ধর্ষণের বর্ণনা দেয়।
ইটভাটার কিশোরী শ্রমিককে ধর্ষণ
শেরপুরের নকলায় ইটভাটার কিশোরী শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগে আরেক পুরুষ শ্রমিককে আটক করেছে পুলিশ। রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। আটককৃত যুবক নকলা উপজেলার এফ আর বি ব্রিকসে কাজ করত। তার নাম সাব্বির হোসেন গাজী (২০)। ধর্ষণের শিকার কিশোরী তার সঙ্গে একই ইটভাটায় কাজ করত।
পুলিশ জানায়, সাব্বির রোববার বিকেলে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি স্থানীয়রা জানতে পেরে পুলিশকে খবর দেয়। পরে নকলা থানা পুলিশ কিশোরী শ্রমিককে উদ্ধার করে এবং ধর্ষণের অভিযোগে সাব্বির হোসেন গাজীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
বগুড়ায় স্কুল ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে একাধিকবার ধর্ষণ
বগুড়ার শেরপুরে স্কুল ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে ধর্ষণের অভিযোগে মোহাম্মদ সুজন নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে শেরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গত শনিবার ৮ মার্চ রাতে অভিযুক্ত ধর্ষক সুজনকে ধনকুন্ডি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সিমাবাড়ী ইউনিয়নের ধনকুন্ডি গ্রামের আরজিনা বেগম ওমেরা গ্যাস কোম্পানির লোকদের তার বাড়ি থেকে রান্না করে খাওয়াতেন। সেই সুবাদে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলা এলাকার সৈয়দ আলী সরকারের ছেলে তাজুল ইসলামের সেই বাড়িতে যাতায়াত ছিল। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ফুসলিয়ে আরজিনা খাতুনের নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে তাজুল ইসলাম। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ আগস্ট আনুমানিক রাত ৯ টার দিকে স্কুল ছাত্রীর শয়ন কক্ষে ঢুকে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ ও তার ভিডিও ধারণ করে। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে বললে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দেয়। ধর্ষণের ঘটনাটি স্কুল ছাত্রীর অগোচরে সিমাবাড়ী ইউনিয়নের ধনকুন্ডি গ্রামের এজাব আলীর ছেলে সুজন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিও করে। পরবর্তীতে সুজন উক্ত ভিডিও ওই ছাত্রীকে দেখিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য প্রস্তাব দেয়। এতে সে রাজী না হলে গত ৫ অক্টোবর আনুমানিক রাত ৯ টার দিকে তার মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে সুজন তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে স্কুল ছাত্রীর ওই ভিডিও সুজন তার সহযোগী একই গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে সুলতান, মৃত কুদ্দুসের ছেলে মো. রুবেল ও হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. বাবুর সহযোগীতায় তার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষাথীর মা আরজিনা খাতুন বাদি হয়ে ৮ মার্চ শনিবার রাতে শেরপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে ধর্ষক সুজনকে আটক করে থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মামলার প্রেক্ষিতে ২ নং আসামী সুজন কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।
প্রতিবেদন— আরিফ আজগর, নাইমুর রহমান তালুকদার, রাশেদ নিরব/এমটিআই