আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ পরিদর্শন চট্টগ্রাম রেল বিভাগের প্রতিনিধি দলের

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েল গেজ রেলপথ পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। গতকাল দুপুরে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশনে পৌঁছে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবনের কার্যক্রম, অবকাঠামো এবং সীমান্তবর্তী রেলপথ পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকারী দলে ছিলেন চট্টগ্রাম জোন-১ এর বিভাগীয় প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার আবু রাফি মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, বাংলাদেশ রেলওয়ের পরামর্শক সন্তোষ কুমার সাহু এবং বিপিন কুমার। গঙ্গাসাগর স্টেশনে ঘুরে দেখার পর তারা রেললাইনের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যান এবং বিকেলে ফিরে এসে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন।
ইঞ্জিনিয়ার আবু রাফি জানান, রেলপথটির নির্মাণকাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। স্টেশন এলাকায় ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি চলছে। বাকি কিছু কারিগরি এবং প্রশাসনিক কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের কনসালটেন্ট সন্তোষ কুমার সাহু বলেন, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ চালু হলে দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত যেমন সহজ হবে, তেমনি বাণিজ্যিক সম্পর্কও নতুন মাত্রা পাবে।
প্রসঙ্গত, প্রায় ২৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই রেলপথটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে ভারতের নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ১২.২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথের মধ্যে ৬.৭৮ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশ অংশে। ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এই কাজ সম্পন্ন করে।
২০১৮ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটি দেড় বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারিসহ নানা জটিলতায় সময় লাগে প্রায় ৬ বছর। অবশেষে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যৌথভাবে রেলপথটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আরও পড়ুন
উদ্বোধনের আগের দিন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক প্রজ্ঞাপন জারি করে এ পথে বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমতি দেয়। ভারতের অর্ধশতাধিক পণ্য বাংলাদেশে আমদানির ছাড়পত্র এবং সবধরনের পণ্য রপ্তানির সুবিধা দেওয়া হয় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের।
যদিও একাধিকবার ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়েছে, তবুও রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও কিছু অবকাঠামোগত কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় রেল চলাচল শুরু হয়নি। তবে সর্বশেষ এই পরিদর্শন ইঙ্গিত দিচ্ছে, সব জটিলতা কাটিয়ে শিগগিরই এই রুটে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে।
মাজহারুল করিম অভি/এনএফ