নৌকায় নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই
চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নৌ-রুটগুলো চালু রাখার অনুমতি দেয় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। তবে এরই পরিপ্রেক্ষিতে কুড়িগ্রাম জেলার সব নৌ-রুট চালু রয়েছে। এসব নৌ-রুট দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছেন হাজার হাজার যাত্রী। যাত্রী পারাপার করা নৌ-রুটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।
এছাড়াও করোনাকালীন অজুহাতে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। সরেজমিনে জেলা সদরের যাত্রাপুর, চিলমারীর রমনা, উলিপুরের জোড়গাছ, সদরের মোগলবাসা, রৌমারী, রাজিবপুরের ঘাটগুলোতে ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
জেলার চিলমারীর রমনাঘাটে নৌকার যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, করোনাকালীন সরকার নানা বিধিনিষেধ আরোপ করলেও তাতে কোনো কর্ণপাত করছেন না নৌকার মালিক ও ইজারাদাররা। মালিক ও ইজারাদাররা তাদের ইচ্ছা মাফিক যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন।
তারা আরও বলেন, করোনার আগে রৌমারী-চিলমারী নৌ-রুটে প্রতিজনের ভাড়া ছিল ৭০ টাকা এবং মোটরসাইকেল পরিবহনে ভাড়া ৫০ টাকা। লকডাউনের এ সময়ে প্রতিজন যাত্রীর কাছ থেকে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা এবং মোটরসাইকেলপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যা নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ বেশি।
স্থানীয়রা বলেন, জেলা শহর হতে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা। জেলা সদরের সঙ্গে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ইঞ্জিনচালিত নৌকা। জেলা সদরে দাপ্তরিক কাজ, কোর্ট-কাচারি, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসাসহ নানান কাজের জন্য শত শত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় যাতায়াত করে থাকেন।
সদরের যাত্রাপুরঘাটে কথা হয় জহুরুল নামের এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বলেন, যে নৌকায় ৪০ জন যাত্রী যাওয়ার কথা সেই জায়গায় নৌকায় ৫০-৬০ জন যাত্রী নিয়ে চলাচল করছেন মাঝিরা। শহর অঞ্চলে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানা হলেও ঘাটে তার কোনো বালাই নেই। তাছাড়াও নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও অধিক ভাড়া নিচ্ছে নৌকার মাঝিরা।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কথা স্বীকার করে রৌমারী নৌকা ঘাটের ইজারাদার নাসির উদ্দিন বলেন, করোনাকালীন যাত্রী কম হওয়ায় প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে ১২৮ টাকার স্থলে ১৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়ে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতি নৌকায় ২৫ জন যাত্রী নেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে চিলমারী রমনাঘাটের ইজারাদার সাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছি না, নির্ধারিত ভাড়ায় নৌকা চলছে। তবে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে আমরা যাত্রীদের বলছি, তারা আমাদের কথা শুনছেন না।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল ইমরান বলেন, আমরা দু-এক দিনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে নৌকা ঘাটগুলোর অভিযান পরিচালনা করব।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে জনপ্রতিনিধি ও গ্রামপুলিশ বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছেন। পাশাপাশি সীমিত পরিসরে নৌকা ঘাটে মোবাইল কোর্টও কাজ করছেন।
জুয়েল রানা/এমএসআর