ছেলের চুরির অভিযোগে মাকে নাকে খত, সেই বিএনপি নেতার নামে মামলা 

ফেনীতে ছেলের বিরুদ্ধে হাঁস ও কবুতর চুরির অভিযোগ তুলে মাকে নাকে খত দেওয়ানোর ঘটনায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী। মামলায় সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলুকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। বুধবার (৭ মে) ভুক্তভোগী সাজেদা বেগম বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় এ মামলা করেন। 

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ রিসাল, মাইনুদ্দিন বেনু, গিয়াস উদ্দিন, মাইনুদ্দিন সোহাগ, মোহাম্মদ আজাদ, অনিক, সামসুর রহমান লাভু, ইব্রাহিম খলিল, বাইট্টা নেজাম, মাইনুদ্দিন জাসিম ও সোহেল। তারা সবাই পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে তাদের আসামি করা হয়েছে। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১ মে রাতে পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্যম মাথিয়ারা গ্রামে সালিসি বৈঠকে সাজেদা বেগম ও জোহরা বেগম নামে দুই নারীকে তাদের ছেলেদের চুরির অভিযোগে নাকে খত দিতে বাধ্য করা হয়। সেখানে বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন দেলু লাঠি দিয়ে সাজেদা বেগমের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করে ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতে ইউনিয়নের মধ্যম মাথিয়ারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রোববার (৪ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুই নারীকে নাকে খত দেওয়ানোর ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। একইদিন এ ঘটনায় অভিযুক্ত সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেলুকে দলীয় সব পদ থেকে অব্যাহতি দেন জেলা বিএনপি।
  
১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, আশপাশে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে আছেন। মাঝখানে সাজেদা বেগম ও জোহরা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ছেলের অপরাধে দুইজন মায়ের সম্পৃক্ততার কথা বলা হয়। তারা অস্বীকার করলেও একপর্যায়ে পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু হাতে লাঠি নিয়ে অশ্রাব্য বাক্য উচ্চারণ করে দুজনকে নাকে খত দেওয়ান। 

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এক নারী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

তারেক চৌধুরী/এমএএস