বাড়ি ফরিদপুর, অপারেশনে গিয়েছিলেন পাঁচবিবিতে

সবার বাড়ি ফরিদপুর। অপারেশনে গিয়েছিলেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে। তবে লক্ষ্য ব্যর্থ হয়েছে তাদের। এ সময় এলাকাবাসী একজনকে ঘটনাস্থলেই আটক করেছেন। তদন্তে পাওয়া বাকি চারজনকে র্যাব-১০ এর সহায়তায় গত শুক্রবার (৯ মে) বিকেল ৫টা থেকে শনিবার (১০ মে) সকাল পর্যন্ত ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে।
শনিবার(১০ মে) সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে র্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্প। র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারের পর তাদের পাঁচবিবি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব-১০ ফরিদপুর। সকলেই জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে হত্যা চেষ্টা ও অস্ত্র মামলার আসামি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গত ১৪ এপ্রিল রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে জয়পুরহাট বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামীম হোসেন (৩১) পাঁচবিবি পৌরসভা বাজারের নিউ গার্মেন্টস অ্যান্ড ক্লথ স্টোর-এর সামনে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় শামীমের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পাঁচবিবি উপজেলার সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেকুন্নাহার শিখা (২৭) পূর্বপরিকল্পনা ও নির্দেশনা অনুযায়ী অজ্ঞাতনামা কয়েকজন আসামিকে সঙ্গে নিয়ে পিস্তল দিয়ে শামীমকে লক্ষ্য করে গুলি করে। তবে শামীম মাটিতে শুয়ে পড়ে প্রাণে রক্ষা পান। এ সময় আসামিরা পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী মো. রুবেল হোসেন (৩২) নামে একজনকে আটক করে।
রুবেল হোসেন ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মো. শাহাদৎ মণ্ডলের ছেলে। আটকের সময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও চারটি গুলি জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় গত ১৫ এপ্রিল বিএনপি নেতা মো. শামীম হোসেন বাদী হয়ে পাঁচবিবি থানায় হত্যাচেষ্টা ও অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনার তদন্তে প্রাপ্ত আসামিদের নাম জানতে পারেন। তাদের সকলের বাড়ি ফরিদপুরে। আসামিদের গ্রেপ্তারে সহায়তা চেয়ে পাঁচবিবি থানা পুলিশ র্যাব-১০-এর সহযোগিতা কামনা করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে র্যাব-১০ ফরিদপুরের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ও সহকারী পুলিশ সুপার শামীম হাসান সরদার বলেন, গত শুক্রবার (৯ মে) বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ফরিদপুরের গোয়ালচামট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার তদন্তে প্রাপ্ত আসামি মো. রাজুকে (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়। রাজু ফরিদপুর শহরের ভাজনডাঙ্গা এলাকার আলম ফকিরের ছেলে।
শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া ১টা থেকে শনিবার ভোররাত পর্যন্ত দিকে র্যাব-১০ ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার তদন্তে প্রাপ্ত আরও তিন আসামি শহরের দক্ষিণ টেপাখোলার মৃত মজিদ মোল্লার ছেলে জাহিদুল ইসলাম ওরফে জালাল মোল্লা (৪০), একই এলাকার মৃত সামাদ শেখের ছেলে পান্নু শেখ (৩৮), ও ভাজনডাঙ্গা এলাকার ফরহাদ শেখের ছেলে রাকিব শেখকে (৩০) গ্রেপ্তার করে। পরে ওই চার আসামিকে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পাঁচবিবি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কাওসার আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে এ অপারেশনে অংশ নেওয়া ফরিদপুর থেকে আসা ব্যক্তিরা ভাড়াটে খুনি হিসেবে এসেছিলেন কিনা, তা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ওসি আরও বলেন, হত্যাচেষ্টা ও অস্ত্র আইনে ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার হওয়া চারজনকে আগামীকাল রোববার আদালতে সোপর্দ করা হবে।
জহির হোসেন/এমএএস