যৌতুক না দেওয়ায় বিয়ের আসরে হট্টগোল, পুলিশ হেফাজতে বর

নোয়াখালীর মাইজদীতে যৌতুক না দেওয়ার অভিযোগে বিয়ের আসরে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। এতে বর ও কনে পক্ষের আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে হাতাহাতিতে উভয় পক্ষের অন্তত ৭ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলের দিকে মাইজদীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফেনীর দাগনভূঁঞার এক যুবকের সঙ্গে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার এক তরুণীর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের আয়োজন করা হয় মাইজদীর একটি রেস্তোরাঁয়। কনেপক্ষ জানায়, বিয়ের আগের দিন বরকে প্রায় এক লাখ টাকার উপহারসামগ্রী দেওয়া হয় এবং গায়েহলুদ অনুষ্ঠানও সম্পন্ন হয়।
তবে বিয়ের দিন দুপুর ১২টার দিকে বর কনের মায়ের ফোনে কল করে দাবি করেন, তাকে ৫০ লাখ টাকা না দিলে বিয়ে করবেন না। বিষয়টি শুনে কনেপক্ষ হতবাক হয়ে যায়। পরে তারা বরকে অনুষ্ঠানে এসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার অনুরোধ জানালে বর রাজি হন এবং আত্মীয়স্বজনসহ অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন।
দুপুর আড়াইটার দিকে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়, যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এতে কনেপক্ষের তিনজন আহত হন। পরে সুধারাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বরকে থানায় নিয়ে যায়।
কনের মামা মো. হিরণ জানান, প্রায় এক মাস আগে থেকে ফেনীর দাগনভূঁইয়া এলাকার বাসিন্দা ও নোয়াখালী জেলা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক ইকবাল হোসেন জিসানের সঙ্গে তার ভাগ্নির বিয়ের কথাবার্তা শুরু হয়। গত শুক্রবার দুই পরিবারের উপস্থিতিতে বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। ধার্য তারিখ অনুযায়ী আজ শুক্রবার বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। বরকে বৃহস্পতিবার প্রায় এক লাখ টাকার উপহার সামগ্রীও দেওয়া হয়। বরের পরিবারের লোকজন কনের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান করেন।
হিরণ অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে বর জিসান তার বোনের মোবাইল ফোনে ফোন করে জানান, তাকে ৫০ লাখ টাকা দিতে হবে, না হয় তিনি বিয়ে করতে আসবেন না। এ কথা শুনে তার বোন ভেঙে পড়েন। তখন তারা অনুরোধ করে জিসানকে বলেন অনুষ্ঠানে আসার জন্য, এলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। দুপুর আড়াইটার দিকে বর জিসান আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে মেহেরান ডাইন রেস্টুরেন্টে উপস্থিত হন। তখন বিয়ে নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে বরের সঙ্গের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তাদের নারীসহ তিনজন আহত হয়।
বর জিসানের ভগ্নিপতি শাহীন চৌধুরী, কনের পরিবার ৫০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করার যে অভিযাগ করছে তা মিথ্যা। কনের মায়ের একটি আপত্তিকর ছবি বর ফোনে পেয়ে সেটি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিল। এ নিয়ে কনের পরিবার বর ও বরের স্বজনদের ওপর হামলা চালায়। এতে তাদের কয়েকজন আহত হয়। হামলার সময় বরের মোবাইলফোনসহ তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, বিয়ে নিয়ে গণ্ডগোলের জের ধরে বরকে আটকে রাখার খবর পেয়ে পুলিশ বরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ বিষয়ে অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হাসিব আল আমিন/এমএ