বাউফলের ইউএনওকে অপসারণ করা না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাংবাদিক ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির উপজেলা সভাপতি এ এইচ এম শহীদুল হক কে প্রকাশ্যে শাস্তি দেওয়ার হুমকির অভিযোগে স্থানীয় জনগণের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (২১ মে) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও ঝাড়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা যায়, সোমবার (১৯ মে) দুপুর ১২টায় বাউফল গার্লস স্কুলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির যৌথ আয়োজনে স্কুল পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। আয়োজক কমিটির সভাপতি ও কালের কণ্ঠের পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি সোহেল অভিযোগ করেন, ইউএনও আমিনুল ইসলামকে তিনদিন ধরে আমন্ত্রণ জানাতে গেলে তিনি অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন এবং ফোনও ধরেননি।
অনুষ্ঠানে দেরিতে এসে ইউএনও উপস্থিত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সামনে সাংবাদিক সোহেলকে তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করেন এবং বলেন আমি প্রজাতন্ত্রের এমন চাকর, মালিককে শাস্তি দিতে পারি। আমি আপনার ফোন ধরতে বাধ্য না। এই বক্তব্যে উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও হতবাক হন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে বাউফলের পাবলিক মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বাউফল উপজেলা পরিষদের সামনে গিয়ে শেষ হয়। অংশগ্রহণকারীরা ঝাড়ু হাতে ইউএনওর অপসারণের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় বক্তব্য রাখেন, শুভ চন্দ্র শীল, আয়েশা সিদ্দিকা, শাহানা আক্তার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ঘুষ ছাড়া তার দপ্তরে কোনো কাজ হয় না। নাসির ও আনিচ নামে দুইজন স্টাফ রয়েছে, তাদের মাধ্যমে তিনি টাকা লেনদেন করে থাকেন। পটুয়াখালীর একমাত্র সাংবাদিক যিনি দেশে বিদেশে পুরস্কার পেয়েছেন সাংবাদিকতায়। তিনি চারবার ইউনিসেফ মিনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। তার সঙ্গে তিনি খারাপ ব্যবহার করেছেন।
বক্তারা আরও বলেন, আমরা দুর্নীতিবাজ ইউএনওকে বাউফলে চাই না। বাউফলে এমন একজন ইউএনও চাই যিনি প্রকৃত অর্থে জনগণের সেবক হবেন। ইতোমধ্যে তিনি বিভিন্ন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ১৫টি পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে সম্মানীভাতা হিসেবে প্রতিটি কেন্দ্র থেকে ৪০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে এই ইউএনওকে অপসারণ করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এ ব্যাপারে ইউএনও আমিনুল ইসলামকে একাধিকবার কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেনি ।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে সেটা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটেছে। সেটা মিটে যাবে ইনশাল্লাহ কোনো সমস্যা হবে না। কারও ইচ্ছেমতো তাকে (ইউএনও) অপসারণ করা হবে না। যদি সরকার মনে করে তাকে অপসারণ করা দরকার তাহলে অপসারণ করবে।
আরিফুল ইসলাম সাগর/এমএএস