টাকার বিনিময়ে ভিডব্লিউবির চাল বিতরণ, ১১ ইউপি সদস্য আটক

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত ও অসহায় নারীদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিডব্লিউবি (ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট) কার্ডের চাল বিতরণে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগে ঝলইশালশিড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ১১ জন ইউপি সদস্যকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
সোমবার (২৬ মে) রাতে তাদের ঝলইশালশিড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর থেকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এর আগে ভিডব্লিউবি কার্ডের চাল বিতরণের জন্য সুবিধাভোগী বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৫০০ টাকা করে আদায় করেন ওই ইউপি সদস্যরা। এই অভিযোগে পরিষদ চত্বরে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ মানুষ।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। চাল বিতরণে অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়ায় মধ্যরাতে ওই ১১ ইউপি সদস্যকে পুলিশের মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করার সিদ্ধান্ত হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
বিডব্লিউবি কার্ডের আওতায় গতকাল ঝলইশালশিড়ি ইউনিয়নের ২৫৮টি পরিবারকে মাথাপিছু মাসে ৩০ কেজি হারে জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৫ মাসের মোট ১৫০ কেজি করে চাল বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
আটককৃতরা হলেন, বোদা উপজেলার ঝলই শালশিরি ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান, ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হামিজ উদ্দিন, ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রিয়নাথ রায়, ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শুনিল চন্দ্র রায়, ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দাহির উদ্দিন, ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খাদেমুল ইসলাম, ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন ইসলাম, ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম, ১.২.৩নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য শেফালী রাণী, ৪.৫.৬নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য বিলকিস বেগম এবং ৭.৮.৯নং ওয়ার্ডের সদস্য রুপালী বেগম।
পুতুল রানী নামে এক সুবিধাভোগী নারী বলেন, আমাদের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার শুনিল চন্দ্র রায় ভিডব্লিউবির চাল দেওয়ার কথা বলে আমাদের বাড়িতে এসে ৫০০ টাকা নিয়ে যায়।
কালিয়াগঞ্জ দালাল পাড়া এলাকার সুবিধাভোগী নারী ময়না বলেন, চাল দিবে এজন্য মেম্বার আমার কাছে চা খাওয়ার জন্য ৫০০ টাকা নিয়েছে।
আকলিমা নামের আরেক সুবিধাভোগী বলেন, আমার স্বামীর কাছ থেকে চাল দেওয়ার কথা বলে খলিল মেম্বার ৫০০ টাকা নিয়েছে।
বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজির বলেন, তারা যে অপরাধটি করেছে, এটা এক ধরনের ফৌজদারি অপরাধ। এখানে আমরা তাদের কাছ থেকে কিছু অর্থও পেয়েছি। তারা স্বীকার করেছে। সেই অর্থসহ সামগ্রিক বিষয়ে উপযুক্ত আদালতের কাছে আমরা সোপর্দ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমরা আশা করছি আদালত এ ব্যপারে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
আরকে