বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হারাল হাত, এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অনিশ্চিত

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়ে নির্মাণাধীন একটি মার্কেটের ছাদে ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে স্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে পড়ে মারাত্মকভাবে আহত হওয়া মো. রাকিবুল হাসানের (২২) বাম হাত কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে রাকিবের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সোমবার (২৬ মে) জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রাকিবের বাম হাত কেটা ফেলা হয়। এর আগে মঙ্গলবার (২০ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে চরবাটা ইউনিয়নের খাসের হাট এলাকার আমিন সুপার মার্কেটের ছাদে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
রাকিবুল হাসান চরবাটা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আলমগীর সওদাগরের বাড়ির মহিউদ্দিন মিন্টুর ছেলে। তিনি স্থানীয় সৈকত সরকারি কলেজের ২০২৫ সালের এইচএসসি পরিক্ষার্থী। ২৫ জুন থেকে রাকিবের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাকিবুল তার কয়েকজন বন্ধুসহ নির্মাণাধীন মার্কেটটির ছাদে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ছাদের একপাশ ঘেঁষে ১১ হাজার ভোল্টের একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন রয়েছে। অসাবধানতাবশত অন্ধকারে ছাদের কিনারায় গিয়ে দাঁড়ালে তিনি ওই বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে পড়ে যান এবং মারাত্মকভাবে আহত হন।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসক বাম হাত কেটে ফেলতে বলেন।
সৈকত সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সফিকুল ইসলাম পলাশ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। মার্কেটটির পাশে ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থাকলেও কোনো সতর্কতা ছিল না। আমরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই৷ বর্তমানে সে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আছে। তার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত। ইতমধ্যে তার বাম হাত কাটা হয়েছে। চিকিৎসক বলেছে ডান হাতও কেটে ফেলতে হবে।
এ বিষয়ে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সুবর্ণচর জোনাল অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ছেলেটি বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছে। এবিষয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অপারেশনের মাধ্যমে আমরা বাম হাত কেটে ফেলেছি। তবে ডান হাত ও আশঙ্কায় রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
হাসিব আল আমিন/আরকে