আইএফআইসি ব্যাংকের ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী রহস্যজনকভাবে অচেতন

আইএফআইসি ব্যাংকের ছয় কর্মকর্তা রহস্যজনকভাবে অচেতন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে। ম্যানেজারসহ ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ব্যাংকের ভেতর থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১ জুন) দুপুরে কুলিয়ারচর বাজারে হাবিব কমপ্লেক্স দ্বিতীয় তলার আইএফআইসি ব্যাংকের উপ-শাখায় এ ঘটনা ঘটে।
অসুস্থ ব্যাংক কর্মকর্তারা হলেন, আইএফআইসি ব্যাংকের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান, কর্মকর্তা, সিয়াম রহমান, হোসনা বেগম, সৌমিক জামান খান, সিকিউরিটি গার্ড কামাল মিয়া ও মেরিন আক্তার।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুপুর দেড়টায় হঠাৎ কুলিয়ারচরে আইএফআইসি ব্যাংকের কয়েকজন গ্রাহক এসে দেখতে পায় ব্যাংকটির ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং একে একে বমি করতে থাকেন। বিষাক্ত দুর্গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীর কর্মকর্তা কর্মচারীরা অজ্ঞান হয়ে যায়। এসময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় দুইজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও চারজনকে বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকা দুইজনকে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে তারা দুইজনও বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমেদ ভুলন জানান, ৬ জন কর্মকর্তা দিয়ে ব্যাংকটি পরিচালিত হয়। এদের মধ্যে ২ জন মহিলা ও ৪ জন পুরুষ। ব্যাংকে কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিষাক্ত গ্যাসে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। আমরা এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। তবে যতটুকু বুঝতে পেরেছি ব্যাংকে কোনো লুটপাট হয়নি।
স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা ফয়জুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। এসে সিয়াম ও হোসনা নামের দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অবস্থার অবনতি দেখলে তাদের কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের এএসপি নাজমুস সাকিব বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমিসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কুলিয়ারচর থানা পুলিশ ও বাজিতপুর ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসি। এখানে এসে কয়েকজন কাস্টমারের সাথে কথা বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পারি এখানে কোনো রকম ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। তবে ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে। ব্যাংকটি আপাতত বন্ধ রয়েছে।
কুলিয়ারচর উপজেলার নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহরা জানান, বাজিতপুর আইএসআইসি ব্যাংকের উপ-শাখা কুলিয়ারচর ব্যাংকটি। দুপুরে যে কোনো এক সময় ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীরা অজ্ঞান হয়ে যায়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তারা ভর্তি রয়েছে। যতটুকু জানতে পেরেছি তাদের অক্সিজেন ল্যাবেল কমতে শুরু করেছিল। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাদের অক্সিজেন দিলে তারা কিছুটা সুস্থ হয়। তবে তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে তাদের কি ধরনের চেতনানাশক দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যাংক তালাবদ্ধ করে রেখেছে খোলার পর বিস্তারিত জানা যাবে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/এমএএস