বান্দরবানে টানা বৃষ্টিতে ১৫০ কি.মি. সড়কের ক্ষতি, দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ

বান্দরবানে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড় ধসে জেলার প্রায় সব সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু সড়কের পাশের মাটি সড়ে গিয়ে রাস্তার একপাশ পুরোপুরি ধসে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির যে হিসাব পাওয়া গেছে তাতে এর পরিমাণ ৬৩ কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ সরোয়ার হোসেন।
বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলের পানিতে এলজিইডির ইনভেনটরিভুক্ত জেলা সদর ও উপজেলা মিলিয়ে ৯০০ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পাকা সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সরেজমিনে জেলার হলুদিয়া, ভাগ্যকুল, সুয়ালক, রোয়াংছড়ি, কালাঘাটা, লিরাগাও, খানসামা, বাঘমারাসহ কয়েকটি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, দীর্ঘ সাত দিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে রাস্তার মাটি সরে গেছে কয়েকটি স্থানে। এখন উপজেলা হতে কৃষিজাত পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে অনেক সময় নৌপথ ব্যবহার করা লাগছে। নৌপথে পণ্য আনা ও নেওয়া অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। খুব দ্রুততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত করা না হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতের অসুবিধার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে, রোয়াংছড়ি উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিক মং খিং মারমা জানান, এবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার কয়েকটি ব্রিজ, কালভার্টসহ বেশ কয়েকটি ইটের রাস্তা ও পিচের রাস্তা। এসব রাস্তা ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দারা জেলায় যাতায়াত করতেন। আশা করছি রাস্তাগুলো মেরামতে এলজিইডি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

এলজিইডি বান্দরবানের উপসহকারী প্রকৌশলী হৃদয় দত্ত জানান, এবারের ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতের কারণে জেলা ও উপজেলা মিলিয়ে এলজিইডির ইনভেনটরিভুক্ত ৯০০ কিলোমিটার পাকা রাস্তার ভেতর ১৫০ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতির তালিকা আমাদের কাছে এসেছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা পাঠানোর প্রক্রিয়াধীন।
সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ সরোয়ার হোসেন বলেন, এ বছর অতিবৃষ্টি ও পাহাড় ধসের কারণে বেশ কিছু সড়কের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত যে হিসাব আমাদের হাতে পৌঁছেছে, সে হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ ৬৩ কোটি টাকা দাঁড়াবে।
ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তাসাউর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করা হয়েছে। পর্যালোচনায় দেখা যায়, ইনভেনটরিভুক্ত ৯০০ কিলোমিটার পাকা রাস্তার মধ্যে ১৫০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা প্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা মেরামতের জন্য ৬৩ কোটি টাকা লাগবে। আমরা ইতোমধ্যে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অবগত করেছি। খুব দ্রুত প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা আবারও স্বাভাবিক করা হবে।
মো. শহীদুল ইসলাম/এএমকে